ভুতুড়ে বিল, বিদ্যুৎ সংযোগ আর খুঁটি নিয়ে অভিযোগ

মিটারে আছে ৭৩১ ইউনিট। কিন্তু বিল করা হয়েছে এক হাজার ৭০০ ইউনিটের। এক মাসেই প্রায় এক হাজার ইউনিট বেশি। টাকার অংকে প্রায় পাঁচ হাজার বেশি।
এ অভিযোগ ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) নারায়নগঞ্জ (পশ্চিম) অঞ্চলের গ্রাহক স্কুল শিক্ষিকা রোকসানা পারভিনের।
সোমবার নারায়নগঞ্জের কিল্লারপুল এলাকায় ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কো¤ক্সানির (ডিপিডিসি) ছয়টি অঞ্চলের  গ্রাহকদের নিয়ে গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানীতে তিনি এই অভিযোগ করেন।
গ্রাহকরা ভুতুড়ে বিল ছাড়াও বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে হয়রানি এবং ঝুঁকিপূর্ণ খুটির অভিযোগ জানিয়েছেন।
গ্রাহকদের এসব অভিযোগ সমাধানের আশ্বাস দেন ডিপিডিসি কর্তৃপক্ষ।
গণশুনানীতের প্রধান অতিথি ছিলেন ডিপিডিসির চেয়ারম্যান তাপস কুমার রায়। এছাড়া ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল হাসান, পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) রমিজ উদ্দিন সরকার, পরিচালক (অর্থ) গোলাম মোস্তফা, নির্বাহী পরিচালক এটিএম হারুনুর রশীদ, প্রধান প্রকৌশলী একরামুল হক (দক্ষিণ) উপস্টি’ত ছিলেন।
ডেমরা, সিদ্ধিরগঞ্জ, কাজলা, মানিক নগর, নারায়গঞ্জ (পূর্ব) ও নারায়নগঞ্জ (পশ্চিম) অঞ্চলের গ্রাহকদের অভিযোগ নিয়ে এই গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়।
গণশুনানীতে গ্রাহকরা নানা হয়রানির অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় যারা দীর্ঘদিন ঘুরে বিদ্যুৎ সংযোগ পাচ্ছিলেন না এমন গ্রাহকদের তাৎক্ষনিক সংযোগ দেয়ার অনুমোদন দেয়া হয়।
এসময় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বলেন, বছরের পর বছর ঘুরে তার এলাকার ঝুঁকিপূর্ন খুটি বৈদ্যুতিক তার পরিবর্তন করা যায়নি।
বিকেএমইএর সহ সভাপতি মো. হাতেম বলেন, বিদ্যুৎ ছাড়া ব্যবসা বাণিজ্য অচল। অতীতে বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী এসেও বিনিয়োগ না করে চলে গেছে। তবে এখন অবস্থা ভাল।
শুনানীতে মিটার না দেখে ভূতুরে বিল দেয়ার অভিযোগ উঠলে সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তাদের প্রতিবেদন দিতে বলেন উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। স্কুল শিক্ষিকা রোকসানা পারভিনের ভূতুরে বিলের অভিযোগের ঘটনায় নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান কোন সদুত্তর দিতে না পারায় তার উপর ক্ষুব্ধ হোন উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
শুনানী চলার সময় ১০ জনকে তাৎক্ষনিক বিদ্যুৎ সংযোগ ও নতুন মিটারের অনুমোদন দেয়া হয়।
এদিকে শুনানাীতে জানানো হয়, নারায়নগঞ্জের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার প্রকল্কপ্প নেয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে তাপস কুমার রায় বলেন, এক সময় ১৮ ঘন্টা লোডশেডিং ছিল। সেখানে বর্তমান সরকার লোডশেডিং শুন্যের কোঠায় নামিয়ে এনেছে। পরিসংখ্যান নিয়ে অফিসে বসে কাজ করা যায়। কিন্তু গ্রাহকদের সন্তুষ্টির জন্য মাঠে কাজ করতে হয়।
ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ডিপিডিসি মানসম্মত বিদ্যুৎ সেবা দিতে কাজ করে যাচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে গ্রাহকদের প্রযুক্তি নির্ভর বিদ্যুৎ সেবা দেয়া হবে। ফলে গ্রাহক হয়রানি শুন্যের কোঠায় নেমে আসবে। তিনি বলেন, নারায়নগঞ্জকে দুটি গ্রিড লাইনে যোগ করার কাজ চলছে। চর সৈয়দপুরে ১৩২ কেভির দুটো গ্রিড লাইন স্থাপনের কাজ চলছে। এগুলো হলে নারায়ণগঞ্জের বিদ্যুৎ সেবার অনেক পরিবর্তন হবে।
আগামীকালও একই জায়গায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা, রায়েরবাগও আশে পাশের এলাকার গ্রাহকদের নিয়ে গণশুনানী করবে ডিপিডিসি।