ভোলার গ্যাস সিএনজি আকারে লরিতে ঢাকায় আসবে: চুক্তি সই

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভোলা থেকে অল্প কিছু গ্যাস সিএনজি আকারে এনে ঢাকার আশাপাশের শিল্পে দেয়া হবে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে এই গ্যাস কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান পাবে।
প্রথম পর্যায়ে দিনে ৫০লাখ ঘনফুট গ্যাস সিএনজি আকারে আনা হবে। পরে তা ২ কোটি ৫০লাখ ঘনফুটে উন্নীত করা হবে। ভালুকা-গাজীপুরের জ্বালানি সংকটে ভোগা কারখানাগুলো গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবে।
ভোলা থেকে সিএনজিতে রূপান্তর করে বড় লরিতে করে এই গ্যাস আনা হবে। এনে সরাসরি শিল্প কারখানায় দেয়া হবে।
এবিষয়ে রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির সাথে ইন্ট্রাকো’র ১০বছরের চুক্তি হয়েছে।
প্রতি ঘনমিটার এই গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কার্যকর হওয়া দামে শিল্পে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৩০ টাকা। আর সিএনজি ফিলিং স্টেশনে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৪৩ টাকা।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, ভোলায় আরও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এজন্য আরও কূপ খনন করতে হবে। গ্যাস পরিবহনে নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য উদ্যোক্তাকে আহ্বান জানান তিনি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ভোলার গ্যাসের সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্যই এই উদ্যোগ। এর মাধ্যমে ঢাকার আশেপাশের শিল্পের গ্যাস সংকট অনেকটাই দূর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজম, স্থানীয় বাসা-বাড়িতে গ্যাস সরবরাহের দাবি জানান।
জ্বালানি সচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, ইন্ট্রাকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াদ আলী, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফায়েল আহমেদ বক্তব্য রাখেন।
ভোলার গ্যাস সিএনজি আকারে পরিবহনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি নয় সদস্যের কমিটি করে। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে ভোলায় বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৮ কোটি ৬০ লাখ ঘনফুট। ভোলার গ্যাসক্ষেত্রের দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা ১২ কোটি ঘনফুট। বর্তমানে উদ্বৃত্ত গ্যাসের পরিমাণ ৩ কোটি ৪০ লাখ ঘনফুট। ওই প্রতিবেদনে প্রতি ঘনমিটারের দাম ৫১ টাকা ১২ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়। পরে প্রতি ঘনমিটারের দাম ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা চূড়ান্ত করা হয়।
সিএনজি স্টেশনগুলো প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বিক্রি করে ৮ টাকা মার্জিন পায়। সেখানে ভোলার গ্যাস আনতে ইন্ট্রাকো পাচ্ছে ৩০ টাকা ৬০ পয়সা। এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার ব্যাখ্যা হচ্ছে, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে ভোলা থেকে ঢাকা পর্যন্ত গ্যাস আনতে প্রায় ২৩০-২৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। তাই মার্জিন বেশি।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম. তামিম বলেন, সিএনজি আকারে ভোলার গ্যাস আনার পরিকল্পনা ভালো উদ্যোগ। অনেক দেশেই এখন গ্যাস সরবরাহে এই পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলাদেশে পরিবহন সক্ষমতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সিএনজি আকারে গ্যাস পরিবহন খুব ঝুঁকিপূর্ণ।