মগবাজানে বিষ্ফোরণ: কারণ এখনও অজানা?
নিজস্ব প্রতিবেদক/বিডিনিউজ:
রাজধানীর মগবাজার এলাকার তিনতলা এক ভবনের নিচতলায় ভয়াল বিস্ফোরণের পর বরাবরের মতোই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।
তবে পরিষেবা সংস্থাগুলো যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করলে এবং জনগণের দুর্দশা লাঘবে আন্তরিক হলে এমন মর্মান্তিক ঘটনাই হয়ত দেখতেই হতো না বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
তাদের অভিযোগ, সেবা সংস্থাগুলো দুর্ঘটনা ঘটার পর দৌড়ঝাঁপ দেখায়। অথচ বহুদিন থেকেই এই এলাকায় ‘গ্যাস লিকেজের’ সমস্যা আছে। তাছাড়া ছোট মাত্রার একাধিক বিস্ফোরণও ঘটেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কোনো সংস্থাই গা করেনি।
এমনিভাবেই নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লার মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকারি সেবা সংস্থাগুলোর অবহেলার মাশুল দিতে হয়েছিল ৩৪ জনকে।
মগবাজারে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে রাজধানীর ব্যস্ত মগবাজার ওয়্যারলেস গেইট এলাকা। বিস্ফোরণে আউটার সার্কুলার রোডের ৭৯ নম্বর হোল্ডিংয়ের তিনতলা একটি ভবন ধসে পড়ার মতো দশা হয়।
রাস্তার উল্টো দিকে আড়ং, বিশাল সেন্টার, নজরুল শিক্ষালয়, রাশমনো হাসপাতালসহ আশপাশের ডজনখানেক ভবনের কাচ ভেঙে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তায় থাকা তিনটি বাস ও যাত্রীরা।
ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন চার শতাধিক। এখনও হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন কয়েকজন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগে একবার গ্যাস বিস্ফোরণে স্যুয়ারেজ ড্রেনের স্লাব ভেঙে ওপরে উঠে আসে। বিষয়টি প্রথমে সিটি কর্পোরেশনকে জানানো হয়। সিটি কর্পোরেশন তিতাসকে জানাতে বলে। কিন্তু তিতাসকে জানিয়েও কোনো ফল হয়নি। ২০১৯ সাল থেকে স্যুয়ারেজে গ্যাস বিস্ফোরণের একাধিক ঘটনা ঘটেছে। গত জানুয়ারি মাসে মগবাজার মোড় এলাকায় (মৌচাকমুখী রাস্তায়) একটি স্যুয়ারেজের স্লাব বিস্ফোরিত হয়ে একটু দূরে ছিটকে পড়ে। এর আগে ডিসেম্বরেও স্লাব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
২০১৯ সালের ২৩ জুলাই মগবাজারের ফুটপাথে একটি স্লাব বিস্ফোরণের ভিডিও ফুটেজও (সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা) সাংবাদিকদের দিয়েছেন স্থানীয় মানুষ।
ফায়ার সার্ভিস বলেছে, তিনতলা ওই ভবনে গ্যাস জমে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছে। আর ধ্বংসস্তূপের বাতাস পরীক্ষা করে ‘হাইড্রোকার্বন গ্যাসের’ উপস্থিতি পেয়েছেন বিস্ফোরক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
তবে কেন, কীভাবে ওই বিস্ফোরণ ঘটল, সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু কেউ বলেননি।
বিস্ফোরণের ওই ঘটনায় ‘অবহেলার’ অভিযোগ এনে রমনা থানায় মামলা হয়েছে, কিন্তু তা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে।
তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল মোহাম্মদ নুরুল্লাহ বলেন, ওই ভবনে শরমা হাউজ রেস্তোরাঁ ও তার দুই পাশের দোকানে তিতাসের কোনো গ্যাস সংযোগ নেই। দুটি এলপিজি সিলিন্ডার দিয়ে সেখানে রান্নার কাজ হত। ছোট্ট ওই ভবনটিতে পৌনে এক ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ দিয়ে ২ পিএসআই চাপের একটা তিতাসের লাইন রয়েছে। ওই মাত্রার চাপের গ্যাসে এত বড় বিস্ফোরণ হওয়ার কথা নয়।