বাপেক্স-গ্যাজপ্রম যৌথ কোম্পানি হচ্ছে

বাংলাদেশের বাপেক্স ও রাশিয়ার গ্যাজপ্রম ইন্টারন্যাশনালের সমন্বয়ে একটি যৌথ অংশীদারি কোম্পানি (জেভি) গঠিত হতে যাচ্ছে। এই কোম্পানি দেশের স্থলভাগ ও সমুদ্রবক্ষ ছাড়া বিদেশেও কাজ করবে।
বাপেক্স এ দেশের রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কোম্পানি। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কোম্পানি গ্যাজপ্রম এই খাতে বিশ্বের অন্যতম প্রধান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
বাংলাদেশে গ্যাজপ্রম পেট্রোবাংলার নিয়ন্ত্রণে তিনটি সরকারি কোম্পানির পরিচালিত পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্রে ১০টি উন্নয়ন কূপ খননের কাজ করছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত খনন সম্পন্ন হওয়া সাতটি কূপ থেকে দৈনিক প্রায় ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালিত হচ্ছে।
সরকারি-বেসরকারি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান কাজের একপর্যায়ে গ্যাজপ্রম বাপেক্সের সঙ্গে যৌথ অংশীদারি কোম্পানি গঠনের বিষয়ে পেট্রোবাংলার মাধ্যমে সরকারকে প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। সর্বশেষ ১০ জুলাই গ্যাজপ্রম’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্যালেরি গুলেভের নেতৃত্বে সফররত প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে যৌথ অংশীদারি কোম্পানি গঠনের বিষয়েও কথা বলে। তারপরই প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি সম্পর্কে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও পেট্রোবাংলাকে সবুজ সংকেত দেন।
জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী গ্যাজপ্রম’র প্রস্তাবের প্রতি আমাদের মনোভাব ইতিবাচক। বিষয়টি নিয়ে কীভাবে অগ্রসর হওয়া যায়, সে সম্পর্কে কাজ করা হচ্ছে।’
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের গতি প্রয়োজনের তুলনায় খুব ধীর। গত ১০০ বছরে অনুসন্ধান ও উত্তোলন মিলে কূপ খনন করা হয়েছে ২০০টির কম। কিন্তু দেশের ভেতরে অনুসন্ধানের অনেক জায়গা পড়ে আছে। এ ক্ষেত্রে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) সই করার চেয়ে দেশি-বিদেশি কোম্পানির যৌথ অংশীদারত্বে কাজ করা গেলে অনেক ভালো ফল আশা করা যায়।
সূত্রগুলো বলেছে, ভারতে বর্তমানে ৬৯টি কোম্পানি তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের কাজ করছে। এর মধ্যে ওএনজিসিসহ ১০টি নিজস্ব। অন্য ৫৯টি বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে দেশীয় কোম্পানির যৌথ অংশীদারি কোম্পানি। মিয়ানমারে একটি মাত্র জাতীয় কোম্পানি। এর নিয়ন্ত্রণে ২২টি বিদেশি কোম্পানি কাজ করছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে জ্বালানি মজুত সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা সরকারের জন্য অপরিহার্য। তাই অনুসন্ধানের কাজ ত্বরান্বিত করা দরকার। সরকার মনে করছে, বাপেক্স-গাজপ্রম যৌথ অংশীদারি কোম্পানির মাধ্যমে তার অনেকটাই সম্ভব হতে পারে।
জানতে চাইলে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর বলেন, তাঁরা যৌথ অংশীদারি কোম্পানির কার্যপরিধি সম্পর্কে একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বাপেক্স-গ্যাজপ্রম যৌথ অংশীদারি কোম্পানি স্থলভাগে চট্টগ্রাম-পার্বত্য চট্টগ্রামে এবং সমুদ্রবক্ষে কাজ করতে পারে। এই কোম্পানির মাধ্যমে বাপেক্স দেশের বাইরেও কাজ করার সুযোগ পাবে। এর ফলে বাপেক্সের কর্মদক্ষতা অনেক বাড়বে।
সৌজন্যে: প্রথমআলো