নিজস্ব প্রতিবেদক:
অবশেষে উৎপাদনে আসতে যাচ্ছে রামপালের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ১৬ই ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। এরআগেই পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হবে।
বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কাজী আবসার উদ্দীন এনার্জি বাংলাকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি এনার্জি বাংলাকে বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আমরা প্রস্তুত। কয়লা আমদানি প্রায় চূড়ান্ত। অক্টোবর কিম্বা নভেম্বর মাসের শুরুতে আশা করছি পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
আবসার উদ্দীন বলেন, বাংলাদেশের বিজয় দিবসে সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের সঙ্গে মিল রেখে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটটি চলতি বছরের ডিসেম্বরে চালু হবে। আর দ্বিতীয় ইউনিটটিও সময়মতো বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যাল লিমিটেড (বিএইচইএল) ও বিআইএফপিসিএল নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বিদ্যু কেন্দ্রর কাজ শেষ করার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।
সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারত সচিব পর্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকেও ডিসেম্বর মাসে এই কেন্দ্র চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রর কয়লা সরবরাহের জন্য দরপত্র মূল্যায়ন চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ দেয়া হবে।
ভারত থেকে কয়লা আমদানির বিষয়ে আবসার উদ্দীন বলেন, এ কয়লা মজুদাগারের মেঝে তৈরিতে ব্যবহার করা হবে। আন্তর্জাতিক মানের মেঝে কয়লা দিয়েই তৈরি হয়। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ভেল এই কয়লা আমদানি করছে। বিআইএফপিসিএল নয়।
রামপালে চারটি মজুদাগার করা হচ্ছে। কয়লা এনে এই মজুদাগারে রাখা হবে। তাপ নিয়ন্ত্রণসহ এই মজুদাগারের মেঝে বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। আর তা করা হয় কয়লা দিয়ে। রামপালে চারটি মজুদাগারের মেঝে করতে ৪৫ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হবে। পর্যায়ক্রমে এই কয়লা আনবে তারা। যখন প্রয়োজন হবে তখনই আনবে।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া অথবা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কয়লা আমদানি করা হবে। ইতোমধ্যে সেজন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। যে প্রক্রিয়া দ্রুতই শেষ হবে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে কখনই ভারত থেকে কয়লা আনা হবে না।
কলকাতার শ্যামা প্রসাদ মুখার্জী বন্দরের নেতাজী সুভাষ ডক (এনএসডি) থেকে তিন হাজার ৮০০ টন কয়লার একটি চালান বাংলাদেশে আসবে বলে এনটিপিসির বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই খবর প্রকাশ করেছে। সেখানে কলকাতা বন্দরের ডেপুটি চেয়ারম্যান এ কে মেহেরা জানিয়েছেন, বাগেরহাটের রামপালে রপ্তানির জন্য কয়লাগুলো ধনবাদ থেকে কলকাতা বন্দরে এসে পৌঁছেছে। আগামী দু-তিনদিনের মধ্যে মোংলা বন্দরের উদ্দেশে এসব কয়লা পাঠিয়ে দেয়া হবে। প্রতিটি বার্জে ৩ হাজার ৮০০ টন কয়লা আছে।
মোট ২০০ কোটি ডলারের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ১৬০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে ভারতের এক্সিম ব্যাংক। ঠিকাদার হিসেবে ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস (বিএইচইএল) এই কেন্দ্র নির্মাণ করছে।
ভারতের এনটিপিসি ও বাংলাদেশের পিডিবি যৌথভাবে বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক ১ হাজার ৩০০ মেগাওয়াটের এই মৈত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করছে।
বাগেরহাটের রামপালে নির্মাণাধীন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আমদানি করা কয়লা বাংলাদেশের উদ্দেশে পাঠাচ্ছে ভারত। এরই মধ্যে ভারতের ঝাড়খণ্ডের ধনবাদ থেকে পাঠানো ৩ হাজার ৮০০ টন কয়লা পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বন্দরে খালাস করা হয়েছে। আগামী দু-তিনদিনের মধ্যে তা কয়লাবাহী কার্গোতে করে মোংলা বন্দরের উদ্দেশে পাঠানো হবে।