রামপালে ক্ষতি হবে না: ইউনেসকোকে বাংলাদেশ
ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির কাছে সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের যুক্তি তুলে ধরে প্রকল্পটি এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউনেসকোর সদর দপ্তরে এবিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দবরনে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্ভাব্য পরিবশেগত ক্ষতির ঝুঁকি এড়াতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য বিদ্যুৎ দরকার। কিন্তু সুন্দরবন রক্ষার প্রয়োজনীয়তা বিষয়েও আমরা সতর্ক। এটা আমাদের মূল্যবান সম্পদ।
সুন্দরবনের জন্য ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের স্বীকৃতি আদায়ে ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেষ্টা এবং তাকে জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়ন অব আর্থ’ পুরস্কার দেওয়ার বিষয়টি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সংরক্ষণে সরকারের আন্তরিকতার উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন তৌফিক-ই-ইলাহী।
ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বাগেরহাটের রামপালে যে স্থানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি হচ্ছে, তা সুন্দরবনের প্রান্তসীমার চেয়ে ১৪ কিলোমিটার দূরে এবং বনের বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ থেকে ৬৭ কিলোমিটার দূরে।
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আপত্তি জানিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন ও পরিবেশবাদীদের আন্দোলনের মধ্যে গক বছরের অক্টোবরে ইউনেস্কো উদ্বেগ জানিয়ে চিঠি দেয়।
ইউনেস্কো আশঙ্কা প্রকাশ করছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পোড়ানোর কারণে সালফার ডাই অক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং নাইট্রাস অক্সাইড নির্গত হয়ে অ্যাসিড বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশের সম্ভাব্য ঝুঁকি এড়াতে রামপালে অত্যাধুনিক আলট্রা সুপার ক্রিটিকাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।
বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকার যেসব সাংস্কৃতিক ও প্রাকৃতিক স্থান রয়েছে সেগুলোর সংরক্ষণের দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছে ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি। কোনো স্থান একবার এ তালিকায় স্থান পেলে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রকে তার সংরক্ষণের পুরো দায়িত্ব বহন করতে হয়।
চলতি বছর ২ থেকে ২২ জুলাই পোলান্ডে এই কমিটির পরবর্তী বৈঠকে সুন্দরবন সংরক্ষণের পরিস্থিতি পরীক্ষা করে দেখা হবে।
সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের সর্বাত্মক চেষ্টার বিষয়ে ওই কমিটিকে পুরোপুরি নিঃসংশয় করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সোমবার ওই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে ফ্রান্সে বাংলাদেশ দূতাবাস।
আজারবাইজান, ক্রোয়েশিয়া, কিউবা, ফিনল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, কাজাখস্তান, কুয়েত, লেবানন, পেরু, পোলান্ড, পর্তুগাল, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক, তানজানিয়া ও জিম্বাবুয়ের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।