রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে প্রকৃতির ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে: ভারতীয় বিশেষজ্ঞ
ভারতীয় জ্বালানি ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ সৌম্য দত্ত বলেছেন, বাংলাদেশের রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করলে প্রকৃতি ও মানুষের ওপর সুদূর প্রসারী ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।
শনিবার রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক সেন্টার মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ভারতের গুজরাটের মুন্দ্রা এলাকার একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুকেন্দ্রের ওপর গবেষণা করছেন তিনি। ওই গবেষণার ওপর নির্ভর করেই তিনি এ অভিমত দেন। সৌম্য দত্ত বলেন, সুন্দরবনের তুলনায় ছোট একটি ম্যানগ্রোভ বন মুন্দ্র। ২০০৯ সালে এই এলাকাতে টাটা পাওয়ার ও আদানি গ্রুপ দুটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুকেন্দ্র স্থাপন করে। এরপর দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে মুন্দ্রার ওই বনের ৬০ শতাংশ ধ্বংস হয়ে যায়।
তিনি তার গবেষণায় পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাব উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, ওই এলাকায় মাছ নেই, জলজ উদ্ভিদ পাওয়াই যায় না এমন, কোনো প্রাণ নেই সেখানে। শুধু তাই নয় আশপাশের ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার এলাকায় মাছের পরিমাণ ৬০ শতাংশ কমে গেছে।
ইন্ডিয়া পিপলস সায়েন্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সৌম্য বলেন, মুন্দ্রা এলাকা আগে সফেদা ফলের জন্য বিখ্যাত ছিল, কিন্তু পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রভাব পড়েছে ফল উৎপাদনেও। ফলে কৃষকরা সরে আসছে সফেদা চাষ থেকে। এছাড়াও খেজুর চাষ ৫০-৬০ শতাংশ কমে গেছে। এমনকি শিশু ও বৃদ্ধরা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে নির্গত দূষিত বাতাসের কারণে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, গুজরাটের চেয়ে বাংলাদেশের সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য অনেক বেশি। এ রকম একটি অঞ্চলে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সুদূর প্রসারী ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।
‘সুন্দরবন চাই’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সংগঠনের সমন্বয়ক রিটা রহমান উপস্থিত ছিলেন।