রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন

বাগেরহাটের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে ছয় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।
বৃহষ্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত খুলনা-মংলা মহাসড়কের রামপাল উপজেলার বাবুরবাড়ির সামনে দক্ষিণাঞ্চল উন্নয়ন পরিষদ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে এই মানববন্ধন করা হয়। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ কয়েক’শ সাধারণ মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশ নেন। এছাড়া বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক, রামপাল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুল ওহাব, সাধারণ সম্পাদক শেখ আবু সাইদ, মংলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু তাহেরসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে বিদ্যুতে কোন বিকল্প নেই। যারা দেশের উন্নয়ন চায় না তারা এর বিরোধীতা করছে।
এ সময় মহাসড়কের মংলার গুনাই ব্রিজ থেকে শুরু করে রামপালের ভাগা পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবস্থান করা লোকজনের হাতে ‘রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চাই, ‘দেশের দক্ষিণাঞ্চলকে পিছিয়ে রেখে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়’ এবং ‘উন্নয়ন সব জায়গায় সমান হওয়া চাই’ এমন শে­াগান সম্বলিত প­্যাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার দেখা যায়।

rampal-energybangla 2
আব্দুল খালেক বলেন, উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ প্রয়োজন। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ উদ্যোগে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে। উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে এই তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করা হচ্ছে। সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার আর গভীর অভয়ারণ্য থেকে ৬৯ কিলোমিটার দূরে নির্মিত হচ্ছে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র। এতে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। তিনি বলেন, এ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলে সুন্দরবনের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বনের উপর নির্ভরশীলতা কমবে। এখানে নতুন শিল্প কল-কারখানা গড়ে উঠবে এবং বেকারদের কর্মসংস্থান হবে। বিদ্যুৎ ও কৃষিতে খরচ কমবে, উৎপাদন বাড়বে।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের পরিবেশ-প্রতিবেশ মারাÍক হুমকির মুখে পড়বে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রামপালের বিরোধিতা করে আসছে অনেক দিন ধরে। রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় আধাবেলা হরতাল পালন করেছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
তবে সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, রামপালে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। সেখানে ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ ছাই ধরে রাখা হবে। আবার কয়লা পরিবহনের ক্ষেত্রে যেন কোনো ধরনের দূষণ না হয়, সে জন্যও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এতে সুন্দরবনের পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না। বরং ব্যপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে।