রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিলে চরমপত্র
সুন্দরবন রক্ষায় আল্টিমেটাম দিয়েছে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ বিদ্যুৎ ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
আগামী ২৩ নভেম্বরের মধ্যে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন বন্ধ না হলে ২৪ নভেম্বর চলো চলো ঢাকা চলো কর্মসূচি ঘোষণা এবং ২৬ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাক দেয়া হয়েছে।
শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ-বিদ্যুৎ ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির উদ্যোগে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ সুন্দরবনবিনাশী সব চুক্তি বাতিলের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি শেষে এই ঘোষণা দেয়া হয়।
বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলা এই কর্মসুচির উদ্বোধন করেন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ। সকাল থেকেই শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রতিবাদী গান, নাটক পরিবেশন করেন উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। রামপাল চুক্তি ছুড়ে ফেলো, সুন্দরবন রক্ষা করো’ এই শ্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে অবস্থান কর্মসুচি পালন করা হয়।
জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প একটি জনবিচ্ছিন্ন প্রকল্প। এটা দেশ ও জনগণের স্বার্থে নয়। এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে সারা দেশে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। তাই সরকার এ গণজাগরণে ভীত-সন্ত্রস্ত। আর এ কারণে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে সরকার প্রকল্পের বিরোধীকারীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এ প্রকল্প বাতিল করতেই হবে।
এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যামিরিটাস শিক্ষক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সুন্দরবন রক্ষার যুদ্ধ বাংলাদেশের জীবন-মরণ যুদ্ধ। এ যুদ্ধে কোনোভাবেই পরাজিত হওয়া যাবে না। এখানে হেরে গেলে ভবিষ্যতে সব জায়গায় হেরে যাব আমরা। সুন্দরবন রক্ষায় একাত্তরের মতো বিজয়ী হতে হবে আমাদের। পিছপা হওয়া যাবে না।
কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। যে আন্দোলনের জাগরণ সারা দেশব্যাপী আমরা সূচনা করেছি সেটা স্তব্ধ হবে না। সেই আগুনে রাজনীতির পরিণতি কী হবে সেটা সরকারকে ভেবে দেখার অনুরোধ করছি। তিনি বলেন, রাজনীতিতে পরিবর্তন এনে হলেও আমরা সুন্দরবনকে রক্ষা করার সংগ্রাম অব্যাহত রাখবো। বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান ভূইয়া বলেন, একদিকে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলবেন, অন্যদিকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করবেন, তা হয় না। অতীতের আন্দোলনের কথা স্মরণ করে এই প্রকল্প থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি। খালেকুজ্জামান বলেন, তা না হলে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। এরপর বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে। সেই আন্দোলনে রাজনৈতিক অবস্থার গতি পরিবর্তনও ঘটে যেতে পারে। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাইফুল ইসলাম, মোশরেফা মিশু, জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
অবস্থান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটি, গণসংহতি আন্দোলন, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, সুজন, নাগরিক ঐক্যসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। একই সময়ে ঢাকার বাইরের কয়েকটি অঞ্চলেও অবস্থান কর্মসুচি পালন করে জাতীয় কমিটির নেতারা।