রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য স্বাধীন কমিশন গঠনের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে কড়া নজরদারি রাখতে হবে। যাতে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না হয়। নজরদারির জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা।
রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বিরোধিতার পেছনে রাজনৈতিক কারণ রয়েছে বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম। সভায় তিনি বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে যদি ভারতের পরিবর্তে মালয়েশিয়া জড়িত থাকত, তাহলে এত বিরোধিতা হতো কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আবার রামপালের পরিবর্তে যদি ভারতের সহায়তায় চট্টগ্রামের আনোয়ারাতেও এ প্রকল্প হতো, সে ক্ষেত্রেও বিরোধিতা হতো। রামপাল বিরোধিতার সঙ্গে মূলত পরিবেশগত ঝুঁকি ও ভারতবিরোধী রাজনীতি জড়িত।
ম তামিমের বক্তব্যের বিরোধিতা করে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা ভারত বিরোধিতার জন্য নয়, পরিবেশগত ঝুঁকির জন্য। কারণ, রামপালের কাছেই সুন্দরবনের অবস্থান। এ জন্যই জনগণ এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করছে। একটি নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের মাধ্যমে রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির ঝুঁকি নিরূপণ করার পরামর্শ দেন তিনি।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঝুঁকি বিষয়ে ভারতীয় গবেষক নিত্যানন্দ বলেন, সাধারণত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১০ কিলোমিটারের বাইরে তেমন একটা পরিবেশগত ঝুঁকি থাকে না। সেখানে রামপাল থেকে সুন্দরবনের দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। তাই রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলেও তাতে সুন্দরবনের খুব বেশি ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।
রামপাল প্রসঙ্গে মসিউর রহমান বলেন, যাঁরা এ প্রকল্পের বিরোধিতা করছেন, তাঁরা তাঁদের অবস্থানের পক্ষে বৈজ্ঞানিক ভিত্তি থাকলে তা প্রকাশ করুন। সরকার অবশ্যই তা বিবেচনায় নেবে।
রামপাল প্রসঙ্গে ভারতের সিআইআইয়ের সদস্য পঙ্কজ ট্যান্ডন বলেন, একটি নিরপেক্ষ কমিশন বা কমিটি গঠনের মাধ্যমে পরিবেশগত ঝুঁকির দিকটি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা যেতে পারে। তবে এটি কিছুটা সময়সাপেক্ষও বটে।
অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, তা অনুন্নত প্রযুক্তির। এ ছাড়া রামপাল বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো অনেক বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলা হচ্ছে না।