রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলে এবার মোদিকে চিঠি দেবে জাতীয় কমিটি
বাগেরহাটের রামপালে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে একটি ‘খোলা চিঠি’ দেবে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। আগামী ১৮ অক্টোবর বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনে এই চিঠি হস্তান্তর করা হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মুক্তিভবনে ‘সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলনে দমনপীড়ন, গ্যাস সম্পদ নিয়ে আÍঘাতী তৎপরতা এবং আশু কর্মসূচি’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ। জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক শেখ মুহাম্মদ শহিদুল্লাহর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফেডারেশনের সভাপতি মোশরেফা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বায়ক জোনায়েদ সাকী, বাসদের রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আনু মুহাম্মদ বলেন, প্রস্তাবিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবন আক্রান্ত হলে ভারতের সুন্দরবনও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ কারণেই বাংলাদেশের নাগরিকদের পক্ষ থেকে এই প্রকল্প বাতিলের উদ্যোগ নেবার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ‘খোলা চিঠি’ দেয়া হবে। এ জন্য আগামী ১৮ অক্টোবর, মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমবেত হয়ে মিছিল করে বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনে গিয়ে হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার কাছে এই চিঠি হস্তান্তর করা হবে।
তিনি বলেন, ইউনেস্কোর প্রতিবেদন থেকে পরিষ্কার বার্তা পাওয়া যাচ্ছে যে সরকার যদি আগের মতোই এসব গুরুতর বিষয় উপেক্ষা করে এবং এই প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হয়, তাহলে সুন্দরবন বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকা থেকে বাদ পড়ে যেতে পারে। কাজেই সরকারের উচিত হবে একগুঁয়েমি ত্যাগ করে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ, বিশেষজ্ঞ মত ও ক্রমবর্ধমান জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে অবিলম্বে রামপাল চুক্তি বাতিলসহ সুন্দরবনবিনাশী, বনগ্রাসী সব তৎপরতা বন্ধ করা।
আনু মুহাম্মদ বলেন, রামপালের পক্ষে সরকার যে যুক্তি দিচ্ছে, সেগুলো গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্ব এবং বাংলাদেশের একজন বিশেষজ্ঞ পাওয়া যাবে না যিনি মনে করেন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না। আমরা ভারত বিরোধী নই। আমরা বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তির বিরুদ্ধে। সরকার ভারত, চীন বা রাশিয়ার স্বার্থ দেখছে, কিন্তু বাংলাদেশের স্বার্থ দেখছে না।
অন্যদিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বর্জ্য রাশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা এতদিন বলা হলেও এখন শোনা যাচ্ছে রাশিয়া বর্জ্য ফেরত নেবে না। যদি নেয় তাহলে রাশিয়ার সঙ্গে আলাদা চুক্তি করতে হবে এবং বাড়তি অর্থও বাংলাদেশকে ব্যয় করতে হবে। তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পরিশোধনের কোনো সুস্পষ্ট বিধান না রেখে সরকার রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে বসে আছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের দাবিতে আগামী ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বর ‘চল চল ঢাকা চল’ কর্মসূচি পালন করবে জাতীয় কমিটি। এর আগে চলতি মাসজুড়ে সারা দেশের বিভাগ ও জেলা সদরে সমাবেশ ও পদযাত্রা কর্মসুচি পালন করা হবে।