রামপাল বিদ্যুৎ আর্থিক ও পরিবেশ দুই দিকেই ঝুঁকিপূর্ণ
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র আর্থিক ও পরিবেশ দুই দিক দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। খরচ যেমন বেশি পরিবেশও নিরাপত্তাহীন। বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে প্রচলিত খরচের চেয়ে রামপালে ৬২ শতাংশ বেশি খরচ হবে। ঝুঁকিতে থাকবে সুন্দরবন।
‘ঝুঁকিপূর্ণ ও অতিরিক্ত ব্যয়বহুল রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র: একটি আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সমীক্ষা’ শিরোনামে করা এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে। শনিবার সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি ও ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের (আইইইএফএ) যৌথ উদ্যোগে প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বিদৃ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ১৫ বছরের কর মওকুফ করা হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ৯৩ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। রামপালে কয়লা আনতে নদী খনন ও রক্ষণাবেক্ষণে বছরে দুই কোটি ৬০ লাখ ডলার খরচ হবে। এখানে পুরানো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সমীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এম এম আকাশ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব ডা. মো. আবদুল মতিন। এতে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক সুলতানা কামাল। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য দেন সমীক্ষা প্রতিবেদনের এনার্জি ফিন্যান্স স্টাডিজ, অস্ট্রেলিয়ার পরিচালক ও আইইইএফএ গবেষক জয় শারদা।
অনুষ্ঠানে সুলতানা কামাল বলেন, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। সচেতন জনগণ এই প্রকল্পের বিপক্ষে। একটি নিরপেক্ষ বিজ্ঞানভিত্তিক সমন্বিত সমীক্ষা ছাড়া কোনোভাবেই এ প্রকল্প গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, প্রকল্পটি ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল। তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, এই প্রকল্পের প্রকৃত খরচ গোপন করা হয়েছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জনগণকে প্রকৃত তথ্য জানানো উচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সম্ভাব্য প্রযুক্তিকে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাধুনিক ও নিরাপদ বলা হলেও বাস্তবে সেকেলে হচ্ছে। বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্রকল্পটির কোনো পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই, তাই আইনগতভাবে এর বৈধতাও নেই। ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, এই প্রকল্প বাতিল করা দরকার।