রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে জনগণের মতামত নেয়ার দাবি
সরকার বলছে, রামপাল প্রকল্প সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি করবে না। বিরোধীরা বলছেন, এতে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে গণভোট দিয়ে বিষয়টি সমাধান করা যেতে পারে।
শনিবার এফডিসিতে ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট শিরোনামে ‘রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ’ বিষয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম, তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, ডিবেট ফর ডিমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
তাজুল ইসলাম বলেন, ইউনেস্কোসহ কোন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধীতা করে তথ্যসমৃদ্ধ কোন প্রতিবেদন বাংলাদেশ সরকারের কাছে জমা দিতে পারেনি। তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থানের বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে এবং এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ফলে পানি দূষণের ঝুকিও সর্বনিম্ন পর্যায়ে। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, চায়না ও জাপানে ব্যাপকভাবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, পরিবেশ সুরক্ষা বিবেচনা করে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চুক্তি করা হয়েছে।
অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হলে সুন্দরবনের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে। চারকোটি মানুষের জীবন-জীবিকা বিপন্ন ও হুমকির মধ্যে পড়বে। তিনি বলেন, সুন্দরবনের বিনিময়ে কোন কিছুই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকারের মধ্যেও অনেকে আছেন যারা রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করাকে সমর্থন করেন না। সুন্দরবনকে ঝুকির মধ্যে রেখে কোন উন্নয়ন প্রকল্পই গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি আরো বলেন, রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হলে আশে-পাশের মৎস্যজীবি, বনজীবিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার চার কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবনের পরিবেশের ওপর কোন প্রভাব না ফেলে সুন্দরবন সুরক্ষায় বড় ধরণের ভূমিকা রাখবে। অন্যদিকে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধীকারীরা বলছে এটি চালু হলে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। জীব-বৈচিত্র্য নষ্ট হবে। ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ খ্যাত এই স্থানটি বিলীন হয়ে যাবে। জাতীয় এই ইস্যুতে সংবিধান সংশোধন করে গণভোট দিয়ে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়টি নিস্পত্তির আহ্বান জানান তিনি।
বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সরকারি দল হিসেবে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অতিথিরা অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেয়।