রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পে সুন্দরবন বাঁচানোর পরিকল্পনা নেই

এডভোকেট সুলতানা কামাল বলেছেন, সরকার রামপাল প্রকল্প নিয়ে বাস্তবভিত্তিক ও বস্তুনিষ্ঠ কোন কথা বলছে না। এমনকি বিভিন্ন সময়ে অসত্য তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। সুন্দরবন বাঁচানোর জন্য কোন প্রযুক্তি ও পরিকল্পনা রামপালের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে নেই।
কয়লা বিশেষজ্ঞ ড. রনজিত (রন) শাহু তৈরি করা “রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পে এক্সিম ব্যাংক এর অর্থায়ন ও বিশাল দূষণে সুন্দরবন ধ্বংসের বাস্তবতা’ শীর্ষক দু’টি আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এই উপলক্ষে বুধবার ঢাকা রিপোর্টর্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহবায়ক সুলতানা কামাল এ কথা বলেন। প্রতিবেদন দু’টি উপস্থাপন করেন অধ্যাপক এম এম আকাশ ও অধ্যাপক বদরুল ইমাম। সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক এএম মুয়াজ্জাম হুসেইন, ডা. মো. আব্দুল মতিন, ড. ইফতেখার“জ্জামান, রুহিন হোসেন প্রিন্স, শরীফ জামিল ও মিহির বিশ্বাসসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সুলতানা কামাল বলেন, রামপাল প্রকল্প তৈরির ব্যাপারে সরকার অনঢ়। সরকারের যে ইআইএ রিপোর্ট সেটিও তথ্যভিত্তিক নয়। তিনি বলেন, রামপাল প্রকল্পে এক্সিম ব্যাংক অর্থায়ন করছে। এই ব্যাংক কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। এই টাকা তারা নিজেদের পকেট থেকে দিচ্ছে না, এই অর্থ সেই দেশে জনগণের আমানতের টাকা। আর এ অর্থ দিয়ে সুন্দরবন ধ্বংস করা হচ্ছে। এটা আমানতের খেয়ানত করার মতো।

সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ভারতীয় বংশোদ্ভূত জ্বালানি ও কয়লা বিশেষজ্ঞ রণজিৎ সাহু স্কাইপে যুক্ত হন। তিনি ৫০টি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পে তাঁর কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না—এ কথা যাঁরা বলেন, তাঁরা ভুল বলেন। রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে পরিবেশ সুরক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইএফসি ও ডব্লিউএইচওর যে নীতিমালা আছে, তা মানা হচ্ছে না। রামপাল প্রকল্পের দূষণ নিয়ন্ত্রণে যেসব যন্ত্র ও প্রযুক্তি ব্যবহার হবে, তা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এটি একটি নিন্মমানের প্রকল্প হতে যাচ্ছে। ভারত তার নিজ দেশেও এর চেয়ে উন্নত মানের কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করছে। কিন্তু সুন্দরবনের মতো সংবেদনশীল জায়গার পাশে এ ধরনের কোনো প্রকল্পের অনুমোদন দিচ্ছে না। অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, এ প্রকল্পে বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের যে দাম ধরা হয়েছে, তা প্রকল্প শেষ হওয়ার পর তিন গুণ হবে। ফলে সুন্দরবন ধ্বংস করে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে হবে।