রামপাল বিদ‌্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ করবে না ফ্রান্সের ৩ ব্যাংক

ফ্রান্সের তিনটি বড় ব্যাংক বাংলাদেশের রামপাল কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। ব্যাংক তিনটি হচ্ছে ক্রেডিট অ্যাগ্রিকোল, সোসিয়েতে জেনেরাল ও বিএনপি পারিবাস।
খবরে বলা হয়, ফরাসি ব্যাংক তিনটি আলোচিত রামপাল প্রকল্পে বিনিয়োগ না করার ব্যাপারে গত মাসেই সিদ্ধান্ত নেয়। ফ্রান্সের ক্রেডিট অ্যাগ্রিকোল ব্যাংকের টেকসই উন্নয়ন বিভাগের প্রধান স্তানিস্লাস পোতিয়ে বলেন, বাংলাদেশের রামপাল প্রকল্পে এ গ্রুপের আর্থিক বিনিয়োগ করার কোনো পরিকল্পনা নেই। তাঁদের মধ্যবর্তিতা আইন এবং প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কিছু ঝুঁকির কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরেক ফরাসি ব্যাংক সোসিয়েতে জেনেরালের টেকসই উন্নয়ন এবং সামাজিক ও পরিবেশগত দায়িত্ব বিভাগের পরিচালক জ্যঁ-মিশেল মেপুইস বলেন, খুলনার রামপাল কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পে তাঁরা কোনো আর্থিক বিনিয়োগ বা পরামর্শ দেবেন না।
বিএনপি পারিবাসও একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছে।
১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন রামপাল তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ উদ্যোগের। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ মাসের শুরুতে বাংলাদেশ সফরকালে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশের আইন-কানুন অনুসরণ করেই প্রকল্পটি এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’
পরিবেশবাদী কর্মী ও বিশেষজ্ঞদের অনেকে রামপাল প্রকল্পটি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাঁদের আশঙ্কার কারণ, এটির অবস্থান ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবন থেকে ১০ মাইলেরও কম দূরত্বে। প্রকল্পটি চালু হলে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে নৌযান চলাচল বাড়বে এবং বিভিন্নভাবে বাতাস ও পানি দূষিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ, বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন প্রকল্পটি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে।
দেড়শ কোটি মার্কিন ডলারের এ প্রকল্পের ৭০ শতাংশ তহবিলই বিদেশি বিনিয়োগ থেকে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাকি ৩০ শতাংশ ব্যয় বাংলাদেশ ও ভারত সমানভাবে বহন করবে বলে প্রস্তাব রয়েছে।
এর আগে খবর প্রকাশিত হয়েছিল, প্রকল্পের অংশীদার ভারতের ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার করপোরেশন (এনটিপিসি) পরিবেশগত উদ্বেগের কারণেই নরওয়ের কাছ থেকে প্রত্যাশিত তহবিল না-ও পেতে পারে।