রাশিয়ায় রূপপুরের মতো পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল
রাশিয়ার নভোভারোনেঝ পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ৬নং ইউনিট পরিদর্শন করেছে বাংলাদেশের এক প্রতিনিধিদল। এর আদলেই রূপপুরে স্থাপন করা হচ্ছে পরমাণু কেন্দ্র।
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে রিয়্যাক্টর ভবন, টার্বাইন ভবন, কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শীতলিকরণ টাওয়ারসহ বিদ্যুৎ ইউনিটটির বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখানো এবং একই সঙ্গে কেন্দ্রটির প্রযুক্তি, কার্যক্রম, ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিভিন্ন দিক বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়।
এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের পরমাণু প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম, জিটিভির এডিটর- ইন-চীফ সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা এবং দি ডেইলী স্টারের পাবনা প্রতিনিধি আহমেদ হুমায়ুন কবির।
পারমাণবিক বিদ্যুৎ স্থাপনা পরিদর্শনের সুযোগ করে দেয়ার জন্য রসাটমকে ধন্যবাদ জানিয়ে ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রেফারেন্স প্রকল্পটি বাস্তবে দেখতে পারা ছিল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। পরিদর্শনের পর বাংলাদেশ তার প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য যে প্রযুক্তি বেছে নিয়েছে তার ওপর আমার আস্থা আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, ছয়টি ইউনিট সমৃদ্ধ এই প্রকল্পটি বিশ্বের পারমাণবিক শিল্পে একটি রোল মডেল। কিভাবে একটি ছোট শহর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে রুশ উদ্ভাবনী ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
রাশিয়ার নভোভারোনেঝ বিদ্যুৎপ্রকল্পের ৬নং ইউনিটটি ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর ১২০০ রিয়্যাক্টর ব্যবহারকারী প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্র যা ২০১৬ সালে দেশটির জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হয়। ২০১৭ সালে অনুরূপ একটি ইউনিট লেনিনগ্রাদ পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প-২ এ বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে। নভোভারোনেঝ এনপিপি-২ এ তৃতীয় এমনই একটি ইউনিট ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
ভিভিইআর ১২০০ রিয়্যাক্টর ভিত্তিক পারমাণবিক বিদ্যুৎ ইউনিট বর্তমানে বাংলাদেশ, বেলারুশ, তুরস্ক, ফিনল্যান্ড, মিশর, হাঙ্গেরী এবং উজবেকিস্তানে বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। রুশ ভিভিইআর প্রযুক্তির বিবর্তনমূলক মডেল ভিভিইআর ১২০০ রিয়্যাক্টর তার পূর্ববর্তী ভিভিইআর ১০০০ এর তুলনায় বিভিন্ন প্যারামিটারে অপেক্ষাকৃত উন্নত- যেমন উৎপাদন ক্ষমতা ৭ শতাংশ বেশি এবং পরিচালনাকারী জনবলের সংখ্যা ৩০-৪০ শতাংশ কম। ভিভিইআর ১২০০ রিয়্যাক্টরটি বর্তমান বিশ্বে সর্বাধিক নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত এবং এটি আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি এজেন্সি (আইএইএ) কর্তৃক নির্ধরিত সকল নিরাপত্তা চাহিদা পূরণে সক্ষম।
পাবনা জেলার রূপপুরে নির্মাণাধিন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে প্রতিটি ১২০০ মেগাওয়াট উৎপদান ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট থাকবে; প্রথমটির কমিশনিং হবে ২০২৩ সালে এবং দ্বিতীয়টির ২০২৪ সালে। উভয় ইউনিটেই থাকবে ভিভিইআর ১২০০ রিয়্যাক্টর।