রাশিয়া ও ইরানের মধ্যে জ্বালানি বিষয়ে সহযোগিতা চুক্তি
পশ্চিমা বিশ্বের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা মোকাবেলায় রাশিয়া ও ইরান সম্প্রতি নিজেদের মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চুক্তি অনুযায়ী, দেশ দুটি জ্বালানি, ভোগ্যপণ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরস্পরকে সহযোগিতা করবে। রাশিয়ার জ্বালানিমন্ত্রী অ্যালেক্সান্ডার নোভাক ও ইরানের তেলমন্ত্রী বিজান নামদার নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। খবর আরটি।
চুক্তি অনুযায়ী, দেশ দুটি তেল ও গ্যাসক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদার, বিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলোর উন্নয়নে নতুন অবকাঠামো নির্মাণসহ যন্ত্রাংশ, ভোগ্যপণ্য এবং কৃষিক্ষেত্রে একে অন্যকে সহযোগিতা করবে। এ চুক্তিকে মস্কো ও তেহরানের মাঝে মাল্টি বিলিয়ন ডলারের তেল চুক্তির ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গত বুধবার নোভাক নিশ্চিত করেন, রাশিয়া এখন ইরানের অপরিশোধিত তেল আমদানি শুরু করতে পারে। তিনি বলেন, ‘বাজারের চাহিদা অনুযায়ীই সরবরাহের পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।’ এ চুক্তি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কোনো ধারা ভঙ্গ করবে না।
রাশিয়ার পত্রিকা কোমারসারন্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ চুক্তির ফলে দুই দেশের মাঝে তেল বাণিজ্যের পরিমাণ প্রতি বছর ২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে।
নতুন চুক্তির আওতায় মস্কো প্রতিদিন পাঁচ লাখ ব্যারেল ইরানি তেল কিনতে পারে। তবে গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চীন, রাশিয়া, জার্মানি এবং ইরানের মধ্যে সম্পন্ন পারমাণবিক চুক্তির আওতায় অনুমোদিত ১০ লাখ ব্যারেলের তুলনায় এ পরিমাণ কমই।
পত্রিকাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এক ব্যক্তিগত বৈঠকে এ চুক্তির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান। আগামী ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় দুই দেশের আন্তঃরাষ্ট্রীয় বৈঠকে এ চুক্তির ব্যাপারে আরো বিশদ আলোচনা হবে।
রাশিয়া-ইরান বাণিজ্যের পরিমাণ বর্তমানে প্রতি বছর ৫ বিলিয়ন ডলার। তেল মজুদের দিক থেকে ভেনিজুয়েলা, সৌদি আরব এবং কানাডার পরই ইরানের অবস্থান। দেশটিতে বিশ্বের মোট প্রাকৃতিক গ্যাসের ১৮ শতাংশ মজুদ রয়েছে।