রূপগঞ্জের গ্যাস গ্রিডে যোগ হয়নি

আড়াই বছরেও রূপগঞ্জের গ্যাস গ্রিডে যোগ হয়নি। ঢাকার অদূরে ২০১৪ সালে গ্যাস পাওয়ায় আশার আলো দেখা দেয়। তখন বলা হয়েছিল, নারায়ণগঞ্জের গ্যাসের সংকট নিরসন করবে রূপগঞ্জ গ্যাস ক্ষেত্র। প্রকল্পের সব কাজ ঠিকঠাক শেষ হলেও পাইপ লাইন নির্মাণ নিয়ে জটিলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, গ্যাস ক্ষেত্রটি পূর্বাচল আবাসিক এলাকায়। এখান থেকে গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণ করতে হলে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অনুমোদন প্রয়োজন পড়বে। পাইপ লাইনটি সড়ক এবং জনপথ

বিভাগের জায়গা দিয়ে নির্মাণ করা হবে। অনেক চেষ্টা করেও অনুমতি যোগাড় করতে পারেনি তিতাস গ্যাস বিতরণ কোম্পানি। সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে জ্বালানি বিভাগকে বিষয়টি জানায় তিতাস।

জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, কোনভাবেই জ্বালানি বিভাগও অনুমতি আদায় না করতে পারায় সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়কে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। আগামীকাল রবিবার সকালে মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এ বিষয়ে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

তিতাস গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মীর মসিউর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, পাইপ লাইনটি নির্মাণে সড়ক ও জনপথের অনুমতি প্রয়োজন। চেষ্টা করেছি তাদের অনুমোদন আদায়ে কিন্তু তা এখনও পাওয়া যায়নি।

বাপেক্সের পরিকল্পনায় দেখা যায় ২০১৫ সালের মধ্যে এই প্রকল্পর কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু এখনও এই প্রকল্পর কাজ শেষ হয়নি। রূপগঞ্জকে ২০১৪ সালের ২২ জুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করে পেট্রোবাংলা। আকারে খুব বেশি বড় না হলেও দেশের ২৬তম গ্যাস ক্ষেত্রটির জরিপ শেষ করে আবারও কূপ খনন করা যায় কি না তা বিবেচনা করার কথাও অতীতে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।

বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আতিকুজ্জামান এ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের সব কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু  পাইপ লাইন নির্মাণের কাজ শেষ না হওয়ায় গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না। তিনি জানান, মজুদ নিশ্চিত হওয়ার জন্য রূপগঞ্জে ভূকম্পন জরিপ করা হবে। আপাতত এখান থেকে দৈনিক এক কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

বাপেক্স সূত্র জানায়, রূপগঞ্জে প্রায় তিন হাজার ৬০০ মিটার গভীর অনুসন্ধান কূপের শেষ দিক থেকে গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তবে তিন হাজার ৩০০ মিটার গভীরে গ্যাসের আরেকটি স্তর রয়েছে। ওই স্তরটি ছয় মিটার পুরত্বের। সেখানে আরও গ্যাসের মজুদ রয়েছে। সঙ্গত কারণে তৃতীয়মাত্রার জরিপ শেষে আরও কূপ খনন করলে বেশি পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যেতে পারে।

ঢাকার কাছে নারায়ণগঞ্জ শিল্প এলাকা। এখানে বড় বড় গ্যাস চালিত বিদ্যুত কেন্দ্রও রয়েছে। নারায়ণগঞ্জের শিল্প মালিকরা প্রায় গ্যাসের নিম্ন চাপের অভিযোগ করেন। রূপগঞ্জ ক্ষেত্র থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হলে নিম্নচাপের সমস্যা নিরসন করা সম্ভব।

বাপেক্স ২০১০ সালে রূপগঞ্জে দ্বিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপ চালায়। এতে সেখানে গ্যাসের অস্তিত্ব থাকার বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়। ২০১৪ সালে অনুসন্ধান কূপ খনন করে গ্যাস আবিষ্কার করা হয়। ২০১৫ সালেই এখানে তৃতীয়মাত্রার জরিপ চালিয়ে আরও কূপ খনন করার কথা ছিল। কিন্তু আড়াই বছরেও সরবরাহের জন্য পাইপ লাইন নির্মাণ করতে না পারায় ঝুলে গেছে সব প্রকল্প।