রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রর দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ ছাড়
ইবি প্রতি্বেদক
পাবনার রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রর দ্বিতীয় কিস্তির অর্থছাড় করেছে অর্থমন্ত্রনালয়। দ্বিতীয় কিস্তির জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে মোট ৩৫৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
সম্প্রতি এই অর্থ ছাড় দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তা।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রূপপুর পাওয়ার প্লান্টের জন্য প্রথম কিস্তিতে ৬৪৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা দেয়া হয়েছিল। এপর্যন্ত দুই দফায় মোট এক হাজার দুই কোটি ১৪ লাখ টাকা ছাড় করা হলো। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ৯০ শতাংশই ঋণ হিসেবে দিচ্ছে রাশিয়া ফেডারেশন।
পাবনা জেলার রূপপুর এলাকায় এক হাজার ৬২ একর জমির ওপর এই বিদ্যুৎকেন্দ্রর কাজ চলছে।
রাশিয়ান ফেডারেশনের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এটস্ট্রয় এক্সপোর্টকে চতুর্থ কিস্তির (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ঋণ দিতে প্রয়োজনীয় ইনভয়েস এবং ব্যাংক গ্যারান্টি পাঠানো হয়েছে। চতুর্থ কিস্তিুতে ঋণ পাওয়া যাবে চার কোটি ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ডলার।
রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) মোট ১১ হাজার ৯৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এর মধ্যে এক হাজার ৪৬২ কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে এবং ছাড় করা অর্থের মধ্যে এক হাজার ৪৩৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
এসব অর্থ দিয়ে প্রথম রিঅ্যাক্টরের কাজের সাথে সাথে দ্বিতীয় রিঅ্যাক্টরের কাজও শুরু করা হয়েছে। এছাড়াও রূপপুরের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে পদ্মা নদীর রিভার এমবার্গো ও তীর রক্ষার অবকাঠামো তৈরি, সিগনালিংসহ রেললাইন সংস্কার ও নির্মাণের জন্য ২০১৮-১৯ সালের এডিপিতে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। এই অর্থ বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের পাশাপাশি উন্নয়ন কাজের জন্য ছাড় করতে বরা হয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে। ইতোমধ্যেই রেল মন্ত্রণালয় ৪টি স্থান চিহ্নিত করেছে। যার ভূমির পরিমাণ প্রায় ৯৯.২১ একর। এর মধ্যে ২০৮৯ দাগের ০.৮৬ একর ভূমি এবং ০৮৩ দাগের ১৬.৯৮ একর ভূমি জরুরি ভিত্তিতে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দিতে হবে।
বর্তমানে অতিরিক্ত রিঅ্যাক্টর বিল্ডিংয়ের দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে, চুল্লী ভবন ও ভিত্তি স্ল্যাব শক্তিশালী করা হয়েছে, বাষ্প স্থিতিশীলকরণ বায়ু সংক্রান্ত কুলিং টাওয়ার ও অন্যান্য কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। ইউনিট-১ ২০২৩ সালে এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট কমিশন করা হবে। দু’টি ইউনিট থেকে মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার রোসএটোম কোম্পানির সাথে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য চুক্তি সই করে বাংলাদেশ সরকার। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে শুরু হওয়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পটির মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে এক লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকা। দ্বিতীয় অর্থ বছরে এডিপিতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১১ হাজার ৯৯ কোটি টাকা।
বিজ্ঞান সচিব আনোয়ার হোসেন জানান, যথাযথভাবেই রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রর কাজ এগিয়ে চলেছে। নিদিষ্ট সময়েই এই কাজ শেষ হবে।