রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রর অবকাঠামো স্থাপনের উদ্বোধন আজ

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রর অবকাঠামো স্থাপন (ফার্স্ট কংক্রিট পৌরিং বা এফসিপি) শুরু হচ্ছে আজ। এর মাধ্যমে এই
বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মুল কাজ শুরু হবে। আজ ৩০ শে নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই কাজের উদ্বোধন করবেন।
দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরআগে এই কাজ শুরুর জন্য ‘ডিজাইন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লাইসেন্স’ দেয় বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশন (বিএইসি)। বাংলাদেশ অ্যাটমিক এনার্জি রেগুলেটরি অথোরিটি (বিএইআরএ) আণবিক শক্তি কমিশনকে এই লাইসেন্স দেয়। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রর চুল্লীর ১০০ বছর টেকসই নিশ্চিত করা সহ একাধিক শর্ত দেয়া হয়েছে লাইসেন্সে। এছাড়া প্রকল্প এলাকার বেলে মাটিকে পরমাণু চুল্লি (বিঅ্যাক্টর) উপযোগী করে গড়ে তোলা, পদ্মা নদীর পাড়ের প্রতিরক্ষা বাঁধ করা, জরুরি অবস্থায় ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা এবং প্রকল্পের অবকাঠামোগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এই শর্ত পূরণ হলে আগামী বছর মার্চে নিঃশর্ত লাইসেন্স পাবে বাংলাদেশ। বিএইআরএর সূত্র জানায়, যেখানে বিদ্যুকেন্দ্রের পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন করা হবে, সেখানে পারমাণবিক চুল্লি অন্তত ১০০ বছর চলার মতো মজবুত ও টেকসই হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে নিশ্চিত করতে হবে। এই ধরনের কেন্দ্র স্থাপনের জন্য রূপপুরের বেলে মাটি একটি বড় সমস্যা। এই মাটিকে পারমাণবিক চুল্লি স্থাপনের উপযোগী করার জন্য ঠিকাদার কোম্পানি অ্যাটমট্রয়েস্পপোর্ট ‘ডিপ সয়েল মিশ্চিং’ নামের একটি জার্মান প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
বর্তমানে বিশ্বের ৩১টি দেশে পারমাণবিক বিদ্যুকেন্দ্রের ৪৫০টি ইউনিট চালু আছে। পরমাণু বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ৩২তম দেশ হবে। এবিষয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, এখন বাংলাদেশকে অন্যরা মূল্যায়ন করবে। আমাদের কাজের মূল্যায়ন করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আত্মবিশ্বাস নিয়ে দেশ
চালাচ্ছে এটা তারই একটা ফল। সেই আত্মবিশ্বাসেই অন্য সব খাত এগিয়ে যাচ্ছে। এই কাজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানসিক শক্তি দিয়েছেন। আর সেই শক্তির জোরে এই পর্যন্ত এসেছি। বিদ্যুৎকেন্দ্রর অবকাঠামো স্থাপনের কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। ফুকুসিমা দুর্ঘটনার পর অনেক দেশ পরমানু থেকে পিছিয়ে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল ফুকুসিমায় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রর দুর্ঘটনার কারণে একজন মানুষও মারা যায়নি। কিম্বা একজন মানুষেরও কোন ক্ষতি হয়নি। কেউ অসুস্থ
পর্যন্ত হয়নি। সেখানে সুনামিতে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ মারা গেছে। কিন্তু পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রর জন্য কোন ক্ষতি হয়নি। এই প্রযুক্তি থেকে পিছিয়ে যাওয়ার  যে আওয়াজ উঠেছিল তা অন্য কারণে। বিশ্ববাজার থেকে কেউ কাউকে সরিয়ে দেয়ার জন্য এই প্রযুক্তি থেকে সরে যাওয়ার কথা বলেছিল। সেটা ব্যবসায়ীক বিষয় ছিল। সত্যিকার অর্থে এই প্রযুক্তি ঝুঁকিপূর্ণ কিম্বা নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি এসব কারণে নয়। জনবল তৈরিতে কাজ চলছে বলে তিনি জানান। নির্মাণ কাজ বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশেরও অনেকে আছে। আর তাছাড়া ওখানে মানুষের কাজ কম। সবই তো যন্ত্রে হবে। কম্পিউটারে। মানুষ দিয়ে কিছুই হবে না। সিমেন্ট, পানি, বালু এগুলো মেশানো হবে যন্ত্র নিয়ে। কম্পিউটারে পরিমান বা পরিমাপ ঠিক করা আছে। সেই অনুযায়ি মেশানো হবে। ফলে কোন ত্রুটি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সবই ম্যাকানাইজড। ৬৩টি যন্ত্রে কাজ হবে। সেখানেরতাপমাত্রা যে নিয়ন্ত্রন হবে তাও হবে কম্পিউটারে।