রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে অর্থ বড় চ্যালেঞ্জ
প্রধাননমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে তাগিদ দিয়েছেন। অন্যদিকে রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে অর্থ সংগ্রহ মন্ত্রনালয়ের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েজছে।
প্রধানমন্ত্রী দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ হলে দ্বিতীয়টির কাজ শুরু করতে হবে।
বুধবার সকালে সচিবালয়ে প্রথমবারের মত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে এসে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। এসময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান এং সচিব খোন্দকার মো. আসাদুজ্জামানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞান সচিব প্রধানমন্ত্রীকে তার মন্ত্রনালয়ের সকল কার্যাবলী অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী এসময় বিজ্ঞান জাদুঘরকে আধুনিকভাবে ঢেলে সাজাবার নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে। এছাড়া মন্ত্রনালয়ের কয়েকটি চ্যালেঞ্জের কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। এগুলো হলো, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে অর্থ সংগ্রহ করা ও তা বাস্তবায়ন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনায় দক্ষ জনবল তৈরী এবং নতুন যে অনুবিভাগ ও সেল করা হয়েছে তার স্থান ঠিক করা।
প্রধানমন্ত্রীর সামনে বিজ্ঞান মন্ত্রনালয়ের সাত সংস্থা প্রধান তাদের বিভিন্ন কাজের অগ্রগতি উপস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী তখন এসব কাজে কোন সমস্যা আছে কিনা বা কাজ বাস্তবায়নে কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা তার খোঁজ নেন বলে জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী তার স্বাগত ভাষনে বলেন, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আমাদের অনেক বিচ্ছিন্ন দ্বীপ আছে, বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে সেখানেই আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয় ১৯৬২ সালে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অনেক বড় বড় দেশের দ্বন্দ্ব মোকাবেলা করে কয়েক দশক পর আমাদের এ কাজ বাস্তবায়নে হাত দিতে হয়েছে। এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দীর্ঘ সময় লাগে তাই এখন থেকেই আমাদের এ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদের অগ্রগতির জন্য বিদ্যুৎ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এই উপলদ্ধি থেকে নানা বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। যদি আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চাই, তাহলে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি সব মন্ত্রণালয়ে যাব। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সব দায়িত্ব আমার। জবাবদিহি তো আমাকেই করতে হয়। গতবার আসবো আসবো করে আসতে পারিনি। এবার শুরতেই আসলাম। মতবিনিময়ের মধ্য দিয়েই সকল সমস্যার সমাধান সম্ভব।
দশম জাতীয় সংসদের সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়, শ্রম মন্ত্রনালয়, স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয় পরিদর্শন করেছেন।
বিজ্ঞান মন্ত্রনালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় এ মন্ত্রনালয় ২৬টি প্রকল্পের ৯৯ দশমিক ৭০ ভাগ কাজ শেষ করেছে। এবার এডিপিতে বরাদ্দ ছিল এক হাজার পাঁচ কোটি টাকা। বিদ্যুৎহীন ৮৫৯টি ইউনিয়ন পরিষদে সৌর বিদ্যুৎ দেয়া হয়েছে। যা দিযে তথ্য কেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। ই-সেবা বাড়ানো হয়েছে। দুই হাজার ৮১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব স্তাপন করা হয়েছে। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে পাঁচ হাজার ৮৭ কোটি টাকা একনেক এ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যারমধ্যে এক হাজার ৮৭ কোটি টাকা সরকারি। বাকীটা বৈদেশিক সাহায্য।
প্রধানমন্ত্রীর অফিস শেষে বিজ্ঞান সচিব বলেন, যে কাজ গুলো গুরুত্বে সাথে করতে হবে বিবেচনা করছি তাই আমরা চেলেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। যেন এই সব কাজ সর্তক থেকে করতে পারি। যখন পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে আসবে তখন যেন যোগ্য জনবলের অভাব না হয় সেজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখাও শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যে সমস্যা জানতে চেয়েছেন সে বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কোন সম¯্রা আছে কিনা তা জানতে চেয়েছেন। কিন্তু আমাদের মন্ত্রনালয়ে কোন সমস্যা নেই।
বিজ্ঞান প্রতিমন্ত্রী তার বক্তৃতায় বলেন, আজ দেশের সাধারণ মানুষও বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে জীবন পরিবর্তনের কাফেলায় সামিল হয়েছে। বিজ্ঞানীদের সুবিধার জন্য উন্নতমানের ল্যাব করা হয়েছে। যেখানে বিদেশীরাও পরীক্ষা করাচ্ছে।