লোডশেডিং বলতে কোনো শব্দ নেই: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

লোডশেডিং বলতে কোনো শব্দ এখন দেশে নেই বলে দাবি করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, লোডশেডিং হলো যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যুৎ না থাকে। কিন্তু দেশে বর্তমানে ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে রয়েছে সাড়ে ৬ হাজার মেগাওয়াট। তবে সঠিক সরবরাহ (ডিস্ট্রিবিউশন) ব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ট্রান্সমিশন ও ব্যবস্থাপনার জন্য কাজ চলছে। তাই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
রোববার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে জিল্লুল হাকিমের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
দিদারুল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, বায়ুশক্তি হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সরকার ইতিমধ্যে বায়ুচালিত ৭৫ মেগাওয়াট দুটি বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কক্সবাজার জেলায় ৬০ মেগাওয়াট ও ফেনী জেলার মুহুরী এলাকায় ১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বর্ণিতস্থানের বায়ু প্রবাহের পর্যাপ্ততা সংক্রান্ত উইন্ড ম্যাপিং স্ট্যাডি হতে প্রাপ্ত ডাটার ভিত্তিতে বাণিজ্যিক আকারে বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের ৯টি স্থানে বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবতা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে উইন্ড ম্যাপিং কার্যক্রমের মাধ্যমে ডাটা সংগ্রহের কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রাপ্ত ডাটার ভিত্তিতে ২০১৭ সালের মধ্যে বৃহৎ ক্ষমতার নতুন আরো বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা সম্ভব হবে।
মজুদ গ্যাসে আরো চলবে ১৬ বছর: সামশুল হক টুকুর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশের মজুদকৃত গ্যাস আরো প্রায় ১৬ বছর (২০৩১ সাল পর্যন্ত) ব্যবহার করা যাবে। তিনি বলেন, দেশে প্রাথমিকভাবে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ ছিল ২৭১ দশমিক ১২ টিসিএফ। এ পর্যন্ত (জুন-২০১৫) ১৩ দশমিক ০৩২ টিসিএফ গ্যাস উত্তোলিত হয়েছে। বর্তমানে জুলাই-২০১৫ পর্যন্ত দেশে ১৪ দশমিক ০৮৮ টিসিএফ গ্যাস মজুদ রয়েছে। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে ৮৯০ দশমিক ৬৫ বিসিএফ গ্যাস উত্তোলিত হয়েছে। সে হিসাবে গ্যাস উত্তোলনের হার অপরিবর্র্তিত থাকলে আরো প্রায় ১৬ বছর অর্থাৎ ২০৩১ সাল পর্যন্ত মজুদকৃত গ্যাস ব্যবহার করা যেতে পারে।
যানবাহনে সিএনজির পরিবর্তে আসছে এলপিজি: কামাল আহমেদ মজুমদারে প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী জানান, সরকার সিএনজি ব্যবহারে সংকোচনশীল নীতি গ্রহণ করেছে। (কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস) সিএনজির বিকল্প হিসেবে যানবাহনে (তরলিকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) এলপিজি ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।
মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ২০০৯ সাল হতে ২০১৫ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ৬ হাজার ৩০৬ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৭৩টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। এ ছাড়াও ভারত থেকে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে।
জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাসের বিবেচনা: কাজী ফিরোজ রশীদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কমে গেলেও যে কোনো মুহূর্তে বৃদ্ধি পেতে পারে। দ্রব্যমূল্য, পরিবহন খাতসহ অর্থনীতির সব স্তরে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস/বৃদ্ধির জন্য প্রভাব পড়া স্বাভাবিক। দেশে লিটারপ্রতি জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাসের বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। সেলিম উদ্দিনের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জ্বালানি খাতের মধ্যে তরল জ্বালানি তেল বিক্রয়ে সরকার বর্তমানে কোনো ভর্তুকি প্রদান করছে না।