শেষ হলো রসাটম আয়োজিত পরমাণু ও বিজ্ঞান সপ্তাহ
শেষ হলো পরমাণু ও বিজ্ঞান সপ্তাহ ২০১৮। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জেনারেল কন্ট্রাক্টর- এটমস্ত্রইএক্সপোর্ট, বিশ্বব্যাপী পরমাণু শক্তি তথ্য কেন্দ্রের রুশ নেটওয়ার্ক- এনার্জি অব দি ফিউচারের সার্বিক সহায়তায় পরমাণু ও বিজ্ঞান সপ্তাহ আয়োজন করে রুশ রাস্ট্রীয় পরমাণু শক্তি কর্পোরেশন- রসাটম।
গত ১৪ই জুলাই পাবনায় শুরু হওয়া এই কর্মসূচী ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়া, রাজশাহী এবং ঢাকার মোট ১৩ স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়েকশত বিজ্ঞানমনষ্ক শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
পরমাণু বিজ্ঞান সপ্তাহ’র মূল লক্ষ ছিল বিভিন্ন শিক্ষামূলক ও বিনোদন কার্যক্রম। যেমন- ইন্টারেকটিভ সেমিনার, পাবলিক টক, কুইজ প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞানভিত্তিক গেমস, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, প্রীতি ফুটবল ইত্যাদি।
পরমাণু শক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় যেমন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা, ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর রিয়্যাক্টরের ওপর আলোচনাও করা হয়।
রসাটম দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আন্দ্রেই সেভলিয়াকভ বলেন, ‘২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে পরিনত হওয়ার লক্ষ অর্জনে বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন নতুন প্রজন্ম। এই উৎসব বিজ্ঞানকে তরুণ প্রজন্মেও মধ্যে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প রুশ-বাংলাদেশ মৈত্রী বন্ধনের প্রতীক।
দেশের বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম ভূঞা’র মতে পরমাণু ও বিজ্ঞান সপ্তাহ যথেষ্ট সফল হয়েছে। তিনি বলেন, পরমাণু ও বিজ্ঞান সপ্তাহ আয়োজনের মাধ্যমে পরমাণু শক্তি সম্পর্কে জনগণের অহেতুক ভয় ও উদে¦গ দূরীকরণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। একই সাথে জনগণের জীবন ও অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব সম্পর্কেও ধারনা প্রদান করা হয়েছে।
উৎসবের একজন অংশগ্রহণকারী এবং বুয়েটের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সত্যকি বণিক তার অভিজ্ঞতার বর্ণনা করে বলেন, পরমাণু ও বিজ্ঞান সপ্তাহে মূল্যবান জ্ঞান অর্জন করেছি। নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ সম্পর্কেও জানতে পেরেছি।
সপ্তাহব্যাপী উৎসবে যেসব বিষয়ের ওপর আলোকপাত করা হয় তার মধ্যে ছিল পরমাণু প্রযুক্তি, বাংলাদেশের পরমাণু শক্তি কর্মসূচির উন্নয়ন, আধুনিক পরমাণু চুল্লীর নিরাপত্তা ও সুরক্ষা ব্যবস্থা, দেশের বিজ্ঞান ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে পরমাণু শক্তির ইতিবাচক ভূমিকা, মানুষের জীবনে পরমাণু প্রযুক্তির বিভিন্ন ব্যবহার ইত্যাদি।
বিভিন্ন সেমিনার এবং টক শো’তে অংশ নেন বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার পরমাণু বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা, যাদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক দুই চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম ভূঞা এবং প্রকৌশলী এম. আলী জুলকারনাইন ও রুশ পরমাণু বিশেষজ্ঞ ড. আলেগ তাসলিকভ।
পরমাণু ও বিজ্ঞান সপ্তাহ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা পাবলিক লাইব্রেরী, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মিলিটারী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, ঈশ্বরদী এবং ঢাকা পরমাণু শক্তি তথ্যকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়।