সংশোধন হচ্ছে পেট্রোলিয়াম আইন
বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সুবিধা দিতে সংশোধন করা হচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম আইন।আইন সংশোধনের মাধ্যমে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সরাসরি জ্বালানি তেল আমদানির সুযোগ দেয়া হবে। বিশেষ করে বেসরকারি বিদ্যুত্ কেন্দ্রগুলো এই সুযোগ পাবে।
বিদ্যুত্ কেন্দ্রর উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) অনুমতি নিয়ে তেল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে।কিন্তু বেসরকারি উদ্যোক্তারা বিপিসি’র অনুমতি না নিয়ে নিজেরাই তেল আমদানি করতে চায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে‘বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম আইন, ১৯৭৪’ অনুযায়ি বিপিসি’র অনমেতি ছাড়া বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের সরাসরি তেল আমদানির সুযোগ নেই।এই সুযোগ রেখে বর্তমান আইন সংশোধন করা হবে।
ইতিমধ্যে ১১টি বিদ্যুেকন্দ্রকে তাদের প্রয়োজনীয় তেল সরাসরি আমদানির অনুমতি দিয়েছে জ্বালানি বিভাগ।এক বছর তারা তেল আমদানি করতে পারবে।এরপর আবার অনুমতি নিতে হবে।আমাদনির আগে বিপিসি’র কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে।কোথা থেকে কি পরিমান তেল আমদানি করা হচ্ছে তা জানাতে হবে।কিন্তু বিপিসি’র অনুমতি না নিয়ে নিজেরা সরাসরি আমদানি করার অনুমতি চেয়ে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে উদ্যোক্তারা।
বিপিসি সূত্র জানায়, একবারে কোন তদারকি ছাড়া তেল আমদানি করার বিপক্ষে ছিল বিপিসি।কিন্তু বিপিসি’র বিরোধীতা উপেক্ষা করে মন্পনালয় থেকে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিশেষ সুবিধা দেয়া হচ্ছে।
সরাসরি আমদানি করা প্র্রতি লিটার ফার্নেসে উদ্যোক্তাদের খরচ হবে বর্তমান দর অনুযায়ি ৫৪ টাকা ৭৮ পয়সা।যা বিপিসির কাছ থেকে কিনতে হয় ৬০ টাকা ৯৫ পয়সায়।প্রতি লিটারে চার থেকে পাঁচ টাকা সাশ্রয় হবে।
সহূত্র জানায়, প্রতি লিটার ফার্নেসে বিপিসিকে শুল্ক দিতে হয় সাত টাকা।আর বেসরকারি বিদ্যুেকন্দ্রগুলো শুল্কমুক্ত আমদানির সুবিধা পাচ্ছে।বিপিসিকে শুল্ক মুক্ত সুবিধা দিলে ৫৩ থেকে ৫৪ টাকায় ফার্নেস সরবরাহ করতে পারবে।
গত বছর ফার্নেস থেকে ১৬০ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে বিপিসি।কেরোসিন ও ডিজেলের ঘাটতি মেটাতে এ মুনাফা খরচ করা হয়েছে।
জ্বালানি বিভাগের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, পেট্রোলিয়াম আইন অনুযায়ি বিপিসির বাইরে কেউ জ্বালানি তেল আমদানি করে ব্যবসায় করতে পারবে না।যদি কেউ বাইরে ব্যবসায় না করে শুধু বিদ্যুেকন্দ্রের জন্য তেল আমদানি করে সেক্ষেত্রে সে করতে পারবে।
২০১৪-১৫ অর্থবছরের জন্য অনুমোদন পাওয়া ছয়টি কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি অরিয়ন গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান।আইইএল কনসোর্টিয়াম অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের মেঘনাঘাট ১০০ মেগাওয়াট ও ডাচ্-বাংলা পাওয়ারের সিদ্ধিরগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ কেন্দ্র।এই দুই বিদ্যুত্ কেন্দ্রর বছরে তেলের চাহিদা যথাত্রক্রমে এক লাখ ৩০ হাজার ও এক লাখ ৪০ হাজার টন।একই গ্রুপের ডিজিটাল পাওয়ারের গগননগর ১০২ মেগাওয়াট কেন্দ্রের চাহিদা এক লাখ ৮০ হাজার টন।এছাড়া ইসিপিভি চট্টগ্রামের পটিয়া ১০৮ মেগাওয়াট কেন্দ্রটির এক লাখ ৮০ হাজার, বারকা পতেঙ্গা পাওয়ারের ৫০ মেগাওয়াট কেন্দ্রটির ৯০ হাজার ও অ্যাকন ইনফ্রাস্ট্রাকচারের জুলদা ১০০ মেগাওয়াট কেন্দ্রটির চাহিদা এক লাখ ৩০ হাজার টন।
আগে অনুমোদন পাওয়া কেন্দ্রগুলো হচ্ছে-সামিট নারায়ণগঞ্জ ১০২ মেগাওয়াট, খুলনা পাওয়ার কোম্পানির খুলনা ১১০, খুলনা পাওয়ার কোম্পানির ইউনিট ২-এর ১১৫ ও খান জাহান আলী পাওয়ার কোম্পানির নোয়াপাড়া ৪০ মেগাওয়াট।এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রটি আগামী ডিসেম্বর ও বাকি তিনটি কেন্দ্র জুন পর্যন্ত অনুমোদন রয়েছে।