সংসদীয় কমিটিতে প্রতিবেদন: ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো প্রয়োজন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা দাম বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছে বিদ্যুৎ বিভাগ। পাইকারিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম এক টাকা বাড়ালে বছরে প্রায় নয় হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি কমবে বলে জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে দেয়া এক প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ বিভাগ একথা জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিদ্যুতে চলতি অর্থবছর ৩৫ থেকে ৩৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি প্রয়োজন হবে। তেল দিয়ে বেশি উৎপাদন করা হচ্ছে বলে খরচও বেশি। বিদ্যুৎ উৎপাদনে দিনে ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বাড়ালে ভর্তুকি কমে যাবে ছয় হাজার কোটি টাকা। বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের স্বল্পতা ছাড়াও আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও কয়লার দাম বেড়ে যাওয়া; ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন এবং ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ ক্রয়-বিক্রয়ের পার্থক্যের জন্য উৎপাদন খরচ বাড়ছে।
একই কমিটিতে জ্বালানি বিভাগের দেওয়া অন্য প্রতিবেদনে ডলার সংকটে বিপিসির দেনা বাড়ছে বলে জানানো হয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্য পরিশোধ করতে ১০ থেকে ৫০ দিন পর্যন্ত সময় লাগছে। ১৭ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিপিসির দেনার পরিমাণ ৪০৭ দশমিক ৪২ মিলিয়ন ডলার। প্রতি ডলার ১১০ টাকা হিসাবে ৪ হাজার ৪৮১ কোটি টাকার বেশি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অবস্থা চলতে থাকলে চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি আমদানি ব্যাহত হতে পারে। বেসরকারি কিছু ব্যাংক দুই বছর ধরে ঋণপত্র খুলছে না। সোনালী, জনতা, অগ্রণী এবং রূপালী ব্যাংকের মাধ্যমে জ্বালানি তেল আমদানি করছে। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোও এলসি খুলতে অনীহা দেখাচ্ছে।
বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় চুক্তি অনুযায়ী তেল দিতে রাজি হচ্ছে না বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো। এরই মধ্যে বকেয়া পরিশোধ ছাড়া তেল না দেওয়ার কথা জানিয়েছে দুটি প্রতিষ্ঠান। ১৩ই সেপ্টেম্বর তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুরের ভিটল ও ইন্দোনেশিয়ার বিএসপি তাদের পাওনা পরিশোধে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। তারা সেপ্টেম্বরের বাকি সময় ও অক্টোবরে যদি কার্গো সরবরাহ না করে, তাহলে নিরবচ্ছিন্ন তেল সরবরাহে বিঘ্ন হবে। বিপিসির কাছে ভিটলের পাওনা ১৯ কোটি ৮৮ লাখ ৪৬ হাজার ডলার। বিএসপির পাওনা ৭ কোটি ১ লাখ ২৭ হাজার ডলার।