সনদ পেল রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রর দ্বিতীয় ইউনিট
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রর দ্বিতীয় ইউনিটের নকশা সনদ দেয়া হল। আজ রোববার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁও এ এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বায়রা) এই সনদ দিয়েছে। রাশিয়া এই নকশা তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে নির্মিতব্য ইউনিটের নকশাটির নিরাপত্তা বিষয়টিও নিশ্চিত করা হলো।
এটমস্ত্রইএক্সপোর্ট (এএসই) ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী জেনারেল কন্ট্রাকটর হিসেবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বায়রা) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. নঈম চৌধুরী বলেন, প্রয়োজনীয় সকল পর্যালোচনা শেষ হয়েছে। সব যাচাই বাছাই শেষে এই সনদ দেয়া হল। পরমাণু বর্জ্যর পরিবহন, সংরক্ষণ, নিষ্ক্রিয় করার বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
ড. নঈম চৌধুরী বলেন, পরমাণু গবেষণা চুল্লী এবং পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত বিকিরণের ক্ষতিকর দিক থেকে জনসাধারণ এবং পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সনদ দেয়া হল। জনসাধারণের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং পরিবেশের সুরক্ষা দেয়া আমাদের দায়িত্ব। সেজন্যই এই পর্যালোচনা করা হয়েছে।
এএসই গ্রুপ অব কোম্পানিজের প্রেসিডেন্ট ভ্যালেরি লিমারেনকা এক বার্তায় জানান, জেনারেল কন্ট্রাক্টর হিসেবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ সম্পর্কিত সকল দায়িত্ব পালন করছে এএসই ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী। প্রথম এনার্জি ইউনিটের নির্মাণ কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। চলতি মাসেই দ্বিতীয় ইউনিটের রিয়্যাক্টর ভবনের ভিত্তিতে প্রথম কনক্রিট ঢালাইয়ের প্রস্তুতি চলছে।
পরমাণু বিদ্যুতের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সাইট লাইসেন্স, প্রাথমিক নিরাপত্তা বিশ্লেষণমুলক প্রতিবেদন, কনসট্রাকশন অনুমোদন, চূড়ান্ত নিরাপত্তা বিশ্লেষণমুলক প্রতিবেদন যাচাই করা হবে। এরপর চালনা লাইসেন্স দেয়া হবে। প্রতিবছর এই সনদ নবায়ন করতে হবে।
প্রথম ইউনিটের জন্য পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে ঐ এলাকার মাটি, পানি, বাতাসসহ বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। মাটি, পানি, বাতাস, ভূমিকম্পসহ ৬৩ ধরণের পরীক্ষার ফল পর্যালোচনা করে এই সনদ দেয়া হয়। পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে স্থান উপযুক্ত বলে এই সনদ দেয়া হয়।
দ্বিতীয় ইউনিটের জন্যও এই পরীক্ষা করা হয়েছে। এই পরীক্ষার তথ্য যাচাই করেছে বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশন রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র ইউনিট-২ স্থাপনের সনদ পেতে আবেদন করে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে তথ্য যাচাই করে পরমানু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বায়রা)।
পরমাণু বাণিজ্যিক চুল্লী বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার হয়। এ চুল্লী করতে সনদ নিতে হয়। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এই সনদ দেয়।
পরমাণু বাণিজ্যিক চুল্লীর জন্য বছরে নবায়ন ফি ৩০ লাখ টাকা। এছাড়া সাইটিং এর জন্য ৩ কোটি, স্থাপনের জন্য ২ কোটি এবং চালনার জন্য ২ কোটি টাকা ফি দিতে হবে।
বায়রার চেয়ারম্যান নঈম চৌধুরী বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বাপশক) এর চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক এর কাছে সনদ তুলে দেন।
সনদ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। অন্যদের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. আ ফ ম রুহুল হক, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব মো. নজিবুল রহমান, মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) মো. আবুল কালাম আজাদ ও বিজ্ঞান সচিব মো. আনোয়ার হোসেন।