সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান থমকে আছে

বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান শুরুই করা যাচ্ছে না। এর জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ থেমে আছে।
সমুদ্র জয়ের পর মাল্টি ক্লাইন্ট জরিপ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু তা আজও শুরু করা যায়নি। এখন নতুন করে ‘মাল্টি-ক্লায়েন্ট সার্ভে’ বা ‘বহুমাত্রিক জরিপ’ এর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। এতে অকারণে সময় বেশি লাগবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দুই দেশ ভারত ও মিয়ানমার নিজ সমুদ্রসীমায় খনিজ অনুসন্ধান করে বিপুল গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে। এর মধ্যে মিয়ানমার বাংলাদেশের সীমানা-সংলগ্ন একাধিক ব্লকে গ্যাস পেয়ে তা উত্তোলন করছে। দুই দেশই আরও অনুসন্ধান জরিপ করছে। কিন্তু তারা এধরণের মাল্টি ক্লাইন্ট জরিপ করেনি। এত সময় কম লেগেছে।
মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা-সংক্রান্ত বিরোধ মিটেছে ২০১২ সালের ১৪ই মার্চ। প্রায় সাত বছর পার হয়েছে। ভারতের সাথে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বিরোধ মিটেছে ২০১৪ সালের ৭ই জুলাই। এতদিন বাংলাদেশ সীমানায় সমুদ্রে খনিজ অনুসন্ধানে কার্যত কোন উদ্যোগই নেয়া হয়নি। শুধু মাল্টি-ক্লায়েন্ট সার্ভের পর দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক জরিপ করা হবে বলে পেট্রোবাংলা থেকে বলা হয়েছে।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবিষয়ে বলেন, দ্রুত সময়ে সমুদ্রে খনিজ অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয়া হবে। এখন মাল্টি ক্লাইন্ট সার্ভে করে দ্বিমাত্রিক ত্রিমাত্রিক জরিপ করতে গেলে অনেক সময় নষ্ট হবে।
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পেট্রোলিয়াম বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ম তামিম বলেন, সমুদ্র জয়ের পর অনেক দিন চলে গেছে। তবু এখনও সমুদ্রের খনিজ অনুসন্ধানের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এখন আর অপেক্ষা করা উচিত হবে না। সব বাদ দিয়ে এখনই সমুদ্রে দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক জরিপ শুরু করতে হবে।
সংশ্লিষ্ঠরা জানিয়েছেন, যদি এখনই মাল্টি ক্লায়েন্ট জরিপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তবে তা শেষ করতে দুই বছর লাগবে। তারপর দ্বিমাত্রিক বা ত্রিমাত্রিক জরিপ করলে আরও কমপক্ষে দুই বছর লাগবে। এতে অনেক সময় পার হবে। এতে খনিজ অনুসন্ধানের কাজ শেষ করতে কমপক্ষে সাত বছর লাগবে। তারপর তা ব্যবহারের উদ্যোগের বিষয় আসবে।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি এক কোম্পানি বিনা খরচে সমুদ্রে মাল্টি ক্লায়েন্ট জরিপ করে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু ১৫ বছর তারা এই জরিপের কোন তথ্য দেবে না। কারও তথ্য প্রয়োজন হলে তা কিনে নিতে হবে। এই ১৫ বছরের মধ্যে যদি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলাও কোন তথ্য চায় তবে তাদেরও কিনে নিতে হবে।