সম্বয়হীনতায় জনগণের ভোগান্তি
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী করোনা সংক্রামণ রোধে সাধারণ ছুটি পরবর্তী প্রথম কার্যদিবসে বিদ্যুৎ বিলের বিলম্ব মাশুল জুন পর্যন্ত দিতে হবে না বলে ঘোষণা দেন। এই ঘোষণায় গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিভাগের উপর আস্থা বাড়লেও পরে হঠাৎ সম্বয়হীনতায় জনগণের ভোগান্তি শুরু হয়।
আবাসিক গ্রাহকের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত আবার শিল্প, বাণিজ্যিক, কৃষিসহ অনান্য গ্রাহকের বিল মার্চ থেকে মে পর্যন্ত বিলম্ব মাশুল ব্যতীত ৩০শে জুন পর্যন্ত পরিশোধ সুবিধা দেয়া হয়। এতে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।
আবাসিক ৭টি স্লাবের মধ্যে যে গ্রাহক তৃতীয় ধাপে (২০১-৩০০) ছিল গড় বিল করায় দেখা যাচ্ছে ৩২০ ইউনিটের বিল ৪র্থ ধাপে চলে গেছে। এতে বিলের অর্থের পরিমান বেড়ে গেছে। এভাবে ধাপ পরিবর্তনে বিলের অর্থ বেড়ে গেছে। যেটা কাম্য নয়।
করোনার কারণে মিটার রিডাররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার রিডিং নিতে না পারায় স্ব স্ব বিতরণ সংস্থা গ্রাহকের গড় বিল তৈরি করেছে। এতে নিয়মিত বিলের ও গড় বিলের পার্থক্য থেকেই যায়। কখনো বেশি কখনো কম বিল হয়েছে। করোনায় মানুষ গৃহবন্দী থাকায় বাড়িতে বিদ্যুৎ ব্যবহার বেশি। আবার গরমের কারণেও ব্যবহার বেশি হয়েছে।
বিতরণ সংস্থা গ্রাহক সচেতনায় সম্পূর্ণভাবে তৈরি করতে না পারায় অধিকাংশ গ্রাহক মিটার রিডিং দেখে না। ওয়েবসাইট ভিজিট করে অভিযোগ করে না । অন-লাইন বিল পরিশোর ব্যবস্থা থাকলেও অধিক সংখ্যক গ্রাহক সরাসরি অভিযোগ নিয়ে অফিসে আসে। বিল পরিশোধে অফিস ও ব্যাংকে জমা দিচ্ছে।
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী আবারো পদক্ষেপ নিলেন। মানুষের ভোগান্তি রোধে সাত দিনের সময় দিয়ে টাস্কর্ফোস গঠন করলেন।
বিদ্যুৎ বিভাগ সকল সংস্থার মধ্যে ডিপিডিসি সবচেয়ে তৎপর। একাধিকবার জুমে গ্রাহক মিটিং করে তড়িৎ সমাধান দিলেন। ফেসবুক লাইভে ও জুমে ডিপিডিসি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ব্যবহারে অনেক গ্রহক সন্তষ্ট হয়। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) চারজন প্রকৌশলী সাময়িক বরখাস্ত করার সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া ৩৬ জন প্রকৌশলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া এবং আর ১৩ মিটার রিডার সুপারভাইজারকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করেছে। ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) দুজন মিটার রিডারকে বরখাস্তের সুপারিশ করেছে। রাজশাহী ও রংপুরের ১৬ জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) লিমিটেডের দু’জন মিটার রিডারকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। আর দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার বিতরণ সংস্থা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ২৩০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কারণ দর্শাও, বরখাস্তসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে। স্ব স্ব সংস্থা তাদের সাধ্যমত সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে।
অভিযোগ বিহীন সেবা সংস্থা তৈরিতে ডিজিটাইজেশনের বিকল্প নেই। ভবিষ্যতের জন্য গ্রাহক সচেতনা তৈরি খুবই জরুরি। গ্রাহক যেন রিডিং দেখে, অনলাইনে তৈরি বিল দেখে, লেজার দেখে, অনলাইনে অভিযোগ অথবা সুপারিশ করতে পারে। ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ মেলা হলে মেলায় আগত গ্রাহকের মোবাইল নম্বার দিয়ে তার সকল তথ্য ওয়েবসাইডে ও মোবাইল এ্যাপে দেখতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।
বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা বা কোম্পানি বিদ্যুৎ ক্রয় করে গ্রহাকের নিকট বিক্রয় করে। শিল্প, কল কারখানা বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎ বিক্রয় কমে গেছে। আবার আবাসিক গ্রাহকের ব্যবহার বেশি হওয়ায় বিক্রয় বেশি। তবে শিল্পে ব্যবহার কমায় লোকসান গুনতে হচ্ছে।
ভবিষ্যতের জন্য কিছু বিষয় খুবই জরুরি। এখন কি কি ধরনের সমস্যা সমাধান করেছে স্ব স্ব সংস্থা তার তালিকা প্রকাশ করতে পারে।
ডাক্তার,পুলিশের মত বিদ্যুৎ কর্মীরা প্রতিনিয়ত সেবা দেওয়ায় তাদেরকে সম্মুখ যোদ্ধা ঘোষণা করা উচিত বলে মনে করি।