সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি রূপান্তরে নেতৃত্ব দিতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা (শনিবার, ১৮ই অক্টোবর ২০২৫):
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে সরকারি সব প্রতিষ্ঠান নবায়নযোগ্য জ্বালানির আওতায় আনা হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি রূপান্তরে নেতৃত্ব দিতে হবে।
ঢাকার ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘রোড টু কপ৩০: হাউ ক্যান ন্যাশনাল ইন্টারেস্টস বি অ্যালাইন্ড উইথ গ্লোবাল ক্লাইমেট গোলস?’ –এর উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘এ ওয়ার্ল্ড বিয়ন্ড ক্রাইসিস: ক্লাইমেট সলিউশনস দ্যাট ওয়ার্ক।’
টেকসই ভোগ ও উৎপাদনের ওপর জোর দিয়ে তিনি সকল খাতে পরিবেশবান্ধব কর্মকৌশল গ্রহণের আহ্বান জানান।
পরিবেশ অধিদপ্তর বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবেশ বান্ধব অফিস ভবন নির্মাণ করছে এবং স্থপতি ও প্রকৌশলীদের সহযোগিতায় জ্বালানি দক্ষ পরিবেশবান্ধব ভবনের মডেল তৈরি করছে বলে উপদেষ্টা জানান। শুধু প্রযুক্তি হস্তান্তর সমস্যার সমাধান করবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, জলবায়ু অর্থায়নে দ্বৈত হিসাব এবং দুর্বল বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থা আস্থার ঘাটতি তৈরি করেছে ও অভিযোজন সহায়তার প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাংলাদেশকে তার জাতীয় স্বার্থ, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও মানুষের জীবিকা সুরক্ষায় সক্রিয় থাকতে হবে। তিনি সরকারের হালনাগাদ জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান– এর প্রশংসা করেন, যা সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও সংস্থার অংশগ্রহণ ও মালিকানা প্রতিফলিত করে। পরিবেশ অধিদপ্তরকে তিনি পরিবহন, কৃষি ও শিল্পসহ বিভিন্ন খাতে নির্গমন কমানোর জন্য সময়সীমাসহ একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ দেন।
নবগঠিত বাংলাদেশ ক্লাইমেট ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ– এর অধীনে চারটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠিত হয়েছে এবং সেখানে সিভিল সোসাইটি ও একাডেমিয়ার প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা কারিগরি ও নীতিগত সহায়তা দিতে পারেন।
ইটভাটার পরিবেশগত ক্ষতির প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বিকল্প নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের আহ্বান জানান, যা কার্বন নিঃসরণ কমাবে, কৃষিজমি রক্ষা করবে এবং পাহাড় কাটার প্রবণতা প্রতিরোধ করবে। উর্বর মাটির পরিবর্তে নদী খননের পলি ব্যবহার করে ইট তৈরির প্রস্তাব দেন।
অভিযোজন পদক্ষেপে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, উপকূলীয় বনায়ন, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও স্বল্পব্যয়ী লবণাক্ততা অপসারণ প্রযুক্তি জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় অঞ্চলের সহনশীলতা বাড়াতে অত্যন্ত জরুরি। তিনি উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানান, বাংলাদেশে স্থানীয় সমাধান বাস্তবায়নে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা বাড়ানোর জন্য।
সিপিডি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য খুশি কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাতসহ উন্নয়ন সহযোগীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।