সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে স্যান্তোসের সঙ্গী বাপেক্স

বাপেক্সঅস্ট্রেলীয় কোম্পানি স্যান্তোসের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বাপেক্স। বঙ্গোপসাগরের ১৬ নম্বর ব্লকের মগনামা নামক স্থানে এ দুই কোম্পানি যৌথ উদ্যোগে কূপ খনন করবে। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অনুমোদন শেষে বাপেক্সের পরিচালনা পর্ষদও বিষয়টি অনুমোদন করেছে।
জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও বাপেক্সের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, এখন কোম্পানি দুটির মধ্যে এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হবে। বাপেক্স মগনামায় অনুসন্ধানে ৪০-৫০ শতাংশ অংশীদারত্ব নিতে পারে। এ জন্য গ্যাস উন্নয়ন তহবিল থেকে বাপেক্সকে প্রয়োজনীয় অর্থ-সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে স্যান্তোস একটি কর্মপরিকল্পনা দেবে। এরপর কাজের প্রক্রিয়া শুরু হবে। বাপেক্স বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আরও বৃহত্তর ক্ষেত্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে যাবে। সম্ভাবনাময় মগনামা থেকে তার সূচনা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে তা আরও সম্প্রসারিত হবে।
বাপেক্সের সূত্র জানায়, মগনামা জায়গাটি ১৬ নম্বর ব্লকের সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রের অদূরে। উৎপাদন অংশীদারত্ব চুক্তির (পিএসসি) অধীনে যুক্তরাজ্যের কোম্পানি কেয়ার্ন এনার্জি পিএলসির জরিপে সেখানে তেল-গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা (লিড) চিহ্নিত হয়েছিল। কিন্তু তারা সেখানে কূপ খনন করেনি। একপর্যায়ে কেয়ার্ন ১৬ নম্বর ব্লক স্যান্তোসের কাছে হস্তান্তর করে চলে যায়।
ইতিমধ্যে উত্তোলনযোগ্য মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় সাঙ্গু গ্যাসক্ষেত্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর স্যান্তোস মগনামার জরিপ প্রতিবেদন আরও বিশ্লেষণ করে সেখানে অনুসন্ধান কূপ খননের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এর জন্য তারা একটি সহ-অংশীদার কোম্পানি নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে। এই পর্যায়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেয় বাপেক্সকে স্যান্তোসের সহ-অংশীদার করার।
মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, মগনামায় গ্যাস পাওয়া গেলে সাঙ্গু ক্ষেত্রের গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহের জন্য ব্যবহৃত অবকাঠামোর মাধ্যমেই তা সরবরাহ করা যাবে। শুধু মগনামা থেকে সাঙ্গু পর্যন্ত একটি পাইপলাইন করতে হবে।
কোনো বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের অংশীদার হওয়া এবং সমুদ্রবক্ষে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে অংশ নেওয়া দুটিই বাপেক্সের জন্য এই প্রথম। এ কাজের মাধ্যমে বাপেক্সের জনবল নতুন ধারার কাজ ও অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ পাবে। আরও দু-একটি বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে বাপেক্সের যৌথ উদ্যোগ গড়ে তোলার কথাবার্তা অনেক দিন ধরেই চলে আসছে।
অবশ্য পিএসসির বিধান অনুযায়ী বাপেক্স এ দেশে কর্মরত কয়েকটি বিদেশি কোম্পানির ১০-২০ শতাংশ মুনাফার অংশীদার। এ জন্য বাপেক্সকে কোনো বিনিয়োগ করতে হয় না। আবার বাপেক্সের কোনো জনবল এসব কোম্পানির সঙ্গে কাজ করারও সুযোগ পায় না। স্যান্তোসের সঙ্গে অংশীদারত্ব সে রকম নয়। এ ক্ষেত্রে বাপেক্স বিনিয়োগও করবে, বাপেক্সের জনবলও সরাসরি কাজে অংশ নেবে।
সৌজন্যে – প্রথমআলো