সার্কে আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে আলোচনা
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহজে বিদ্যুৎ কেনাবেচার চুক্তি হতে যাচ্ছে। একই সাথে স্থাপন করা হবে আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ সংযোগ। পাকিস্তান ও মিয়ানমার ছাড়া অন্য ছয়টি দেশ ইতিমধ্যে এই সংযোগ স্থাপনে সম্মত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। আগামী ২৬ ও ২৭ নভেম্বর নেপালের রাজধানি কাঠমুন্ডুতে ২২তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আট দেশের সরকার প্রধান এই সম্মেলনে অংশ নেবেন। এবারের সার্ক সম্মেলনের অন্যতম আলোচ্য সুচি বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করা। এবিষয়ে চুক্তির একটি খসড়া তৈরী করা হয়েছে। খসড়াটি চূড়ান্ত করতে প্রাথমিকভাবে সম্মত আছে ছয়টি দেশ।
এখন বাংলাদেশ নেপাল ও ভারতের মধ্যে আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ সংযোগ আছে। ভারত নেপাল থেকে বিদ্যুৎ নিচ্ছে। বাংলাদেশ নিচ্ছে ভারত থেকে। সার্কভূক্ত অন্য আটটি দেশকেও এই সংযোগের মধ্যে আনা হবে। তখন যে কোন দেশ যে কোন দেশের উপর দিয়ে বিদ্যুৎ আনা নেয়া বা কেনাবেচা করতে পারবে। বাংলাদেশ ভারত উপর দিয়ে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনতে পারবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশও বিদ্যুৎ পাঠাতে পারবে। এভাবে দামের সমন্বয় হলে যে কোন দেশ বিদ্যুৎ আনা নেয়া করতে পারবে।
চুক্তি হলে সার্কভূক্ত দেশগুলো নিজেদের মধ্যে বিদ্যুৎ কেনাবেচা করতে পারবে। সার্ক চুক্তি আলোকে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে এর সুবিধা ভোগ করতে পারবে। এই চুক্তির মাধ্যমে যেসব দেশে বেশি বিদ্যুৎ ঘাটতি আছে তারা উদ্বৃত্ত থাকা দেশ থেকে আনতে পারবে। তাছাড়া যেখানে কম মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব সেখানেও যাদের প্রয়োজন তারা বিনিয়োগ করতে বিদ্যুৎ আনতে পারবে।
গেল অক্টোবরে ভারতের দিল্লীতে পঞ্চম সার্ক জ্বালানিমন্ত্রীদের সম্মেলনে খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়েছিল। সূত্র জানায়, সে সম্মেলনে পাকিস্তান আসেনি। মিয়ানমারও তাদের অবস্থান জানায়নি। শ্রীলংকা ভারতের কাছে সাবমেরিন ক্যাবল করতে বিশেষ সুবিধা চেয়েছিল। সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে সাবমেরিনের মাধ্যমে শ্রীলংকায় বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করতে হলে ১৫০ কিলোমিটার লাইন স্থাপন করতে হয়। যা ব্যয় সাপেক্ষ। অর্থনৈতিকভাবে ১৫০ কিলোমিটার লাইন করা যথার্থ নয়। এজন্য ভারতের কাছে তারা এই সাবমেরিন ক্যাবল ৫০ কিলোমিটার করার প্রস্তাব দিয়েছে। ভারত এবিষয়ে কোন উত্তর দেয়নি।
সার্ক গঠনতন্ত্র অনুযায়ি সকল দেশ একমত না হলে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবিষয়ে আগে বলেছেন, সার্ক দেশগুলোর মধ্যে বিদ্যুৎ বিনিময় করতে যে চুক্তি হবে তার কাঠামোগত নকশা তৈরী করা হয়েছে। শীর্ষ সম্মেলনে এই চুক্তি স্বাক্ষর হলে তা এই অঞ্চলের জন্য দৃষ্টান্ত হবে। আঞ্চলিক সহযোগিতার ওপর বাংলাদেশ সব সময় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বিশেষভাবে আগ্রহী। বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, আমাদের অবস্থান সংযোগ স্থাপনের পক্ষে। খসড়ার সংশোধনির কাজ শেষ হয়েছে।