সুগন্ধি ব্রি ধান ৭৫ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া ( গোপালগঞ্জ), ১ নভেম্বর, ২০২৩ (বাসস):

গোপালগঞ্জে ব্রি ধান ৭৫ দিন দিন কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ব্রি ধান৭৫ একটি স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন ধান। এ ধান সুগন্ধি। ধানের চাল চিকন। ভাত ঝরঝরে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ব্রি ধান৭৫ চাষাবাদে ২০% সার কম লাগে । সুগন্ধি ও চিকন জাতের এ ধান বাজারে বেশি দামে বিক্রি হয়। তাই কৃষক এ ধান চাষাবাদ করে লাভবান হন।ক্ষেত থেকে এ ধান কাটার পর কৃষক রবি শস্য চাষাবাদ করতে পারেন।
স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন ও আগাম এ জাতের ধান চাষাবাদ করে কৃষক ২ ফসলী জমিকে ৩ ফসলী ও ৩ ফসলী জমিকে ৪ ফসলী জমিতে রূপান্তর করতে পারেন। তাই গোপালগঞ্জ,বাগেরহাট ও নড়াইল জেলায় এ ধানের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও সিনিয়র সাইন্টিফিক অফিসার ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের কার্যালয় থেকে গোপালগঞ্জ নড়াইল ও বাগেরহাট জেলার ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি ও ব্রি’র জাত কৃষক পর্যায়ে জনপ্রিয় করণে কাজ করা হচ্ছে।এ বছর আমরা গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও বাগেরহাটে ব্রি ধান৭৫মণ থেকে ২৩মন পর্যন্ত ফলন দিয়েছে। এছাড়া কৃষক পর্যায়েও এ জাতের ধানের চাষাবাদ ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা ।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সাইন্টিফিক অফিসার সৃজন চন্দ্র দাস বলেন, মাত্র ১১০দিনে বিঘা প্রতি ১৯ থেকে ২৩ণ মণ ধান পেয়ে খুশি গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট ও নড়াইল জেলার কৃষক ।ধানে পোকামাকড়ের আক্রমণ নেই।সুগন্ধি এ জাতের ধান চাষের পর কৃষক জমিতেরবি শস্য চাষাবাদ করেন ।তাই কৃষকের কাছে ব্রিধান ৭৫ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, বীজ সরবরাহ পেলে আমরা এ জাতের ধান চাষ কোটালীপাড়া উপজেলায় ছড়িয়ে দেব। এটি ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষক লাভবান হবেন।
গোপালগঞ্জে কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ গ্রামের কৃষক আবুলকালাম, বাশার উদ্দিন, সিরাজুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান এধানের চাল চিকন।ভাত হয় ঝরঝরে।ভাত রান্নার সময় সুগন্ধ বের হয়। আমন মৌসুমে একমাত্র সুগন্ধি চাল এটি।আমরা ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরামর্শ, বীজ-সার ও সহায়তা নিয়ে ব্রিধান৭৫ করেছি।উচ্চফলনশীল এ ধান চাষে সার খরচ ২০ ভাগ কম লেগেছে ।এ ধান চাষ করে একই জমিতে বছরে ৩ থেকে ৪টি ফসল করতে পারি। তাই আমাদেও দেখাদেখি অন্যান্য কৃষকও এ ধান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।আমরা আগামী বছর আরও বেশি জমিতে এ ধানের চাষাবাদ করব ।