সুন্দরবনের কাছে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগ না করার আহ্বান

সুন্দরবনের কাছে প্রস্তাবিত দুটি কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগ না করতে আন্তর্জাতিক ব্যাংক ও অর্থলগ্নিকারী সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন। ঢাকায় দুদিনব্যাপী এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে এই আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে সম্মেলন থেকে এ ব্যাপারে উদ্বেগের বিষয়গুলো আমলে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
দুদিনব্যাপী এ সম্মেলন শনিবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্রাক সেন্টার মিলনায়তনে শুরু হয়। রোববার ৮ দফা ঘোষণা ও ৫ দফা সুপারিশের মাধ্যমে শেষ হয় সম্মেলন। ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশ, সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি ও ওয়াটারকিপার এলায়েন্স যৌথভাবে বাংলাদেশের জ্বালানি কয়লা : পানি ও জলবায়ু পরিবর্তনে প্রভাব শীর্ষক এ সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বাপার সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে সমাপনী অধিবেশনে সম্মেলনের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশের শরীফ জামিল। কারিগরি অধিবেশন ও সমাপনীপর্বে মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ওয়াটারকিপার এলায়েন্স যুক্তরাষ্ট্রের ডোনা লিজেন বাই, সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচীব ও বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আবদুল মতিন, বেলার সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, বিডি রহমাতুল্লাহ, রুহিন হোসেন প্রিন্স, অধ্যাপক সাইফুল হক, জ্যামি হ্যানশন, ড. নাসিফ শামসসহ গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য রাখেন।
দুদিনব্যাপী এ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রবন্ধ ও আলোচকদের বক্তব্য থেকে ঘোষণা ও সুপারিশ সংকলন করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে- বিশ্বে মাথাপিছু কম জ্বালানি শক্তি ব্যবহারকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন অনুসারে বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন উৎস থেকে জ্বালানি শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য মনোযোগী। তবে কিছু শক্তি উৎপাদন প্রকল্প পরিবেশ ও সামাজিক বিবেচনায় খুবই ক্ষতিকর। বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব করেছে।
যার মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বিদ্যুৎ কোম্পানি লিমিটেডের নাম উল্লেখযোগ্য যেটি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র (প্রস্তাবিত) নামে পরিচিত এবং বেসরকারি ওরিয়ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নামও উল্লেখ করা যেতে পারে। এটিও রামপালের সন্নিকটে স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাংলাদেশ কয়লা নীতিমালা ছাড়াই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার চেষ্টা করছে। একটি সার্বজনীন এবং সমন্বিত জ্বালানি নীতি দরকার। সম্মেলন থেকে ৫ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।