সুন্দরবনের মধ্যে জাহাজ চলাচল বন্ধের দাবি
সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে সকল প্রকার জাহাজ চলাচল বন্ধসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। এই দাবি আদায়ের জন্য ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় কনভেনশন এবং ১১ থেকে ১৬ মার্চ সুন্দরবনের দিকে জনযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার পল্টনের মুক্তিভবনে ‘সুন্দরবনে তেল বিপর্যয়ের একমাস: মাঠ গবেষণা ও অনুসল্পব্দান প্রতিবেদন – প্রস্তাবনা ও কর্মসূচি’ বিষয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দাবি ও কর্মসূচি উপস্থাপন করা হয়।
প্রকৌশলী শেখ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ জাতীয় কমিটির কর্মসূচী ঘোষণা করেন। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ও প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক বক্তব্য রাখেন। ড.আব্দুল্লাহ হারুণের গবেষণার প্রাথমিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা। এছাড়া সুন্দরবনের পরিস্থিতির উপর তৈরী করা দুটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন প্রকৌশলী অনুপম সৈকত শান্ত ও শিল্পী আনুশেহ আনাদিল।
দাবি আদায়ে ৬ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞানী, লেখক, শিল্পী, সাংবাদিক, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহণে কনভেনশন করা হবে। ৭ ফেব্রুয়ারি ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে ফুলবাড়ী কমিটির ডাকে ঐ অঞ্চলে অবরোধ এবং দেশব্যাপী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হবে। ১১-১৬ মার্চ ঢাকা থেকে সুন্দরবন অভিমুখে জনঅভিযাত্রা করা হবে।
জাতীয় কমিটির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, প্রাকৃতিকভাবে সুন্দরবনের ক্ষতি কাটিয়ে উঠা নির্বিঘ্ন করতে হবে। কোন ধরনের কথিত উন্নয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে তা বাধা গ্রস্ত করা যাবে না। তেল দূষণের বর্জ্য নিরাপদে উচ্চতাপে পুড়িয়ে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। তেল নিঃসরণের জন্য যাদের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সে সব মৎসজীবী বনজীবীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগণকে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সেবা দিতে হবে। সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র ও জলজ বাস্তসংস্থানের উপর তেল দূষণের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ প্যানেলের মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। শেলা নদী, পশুর নদীসহ সুন্দরবনের সকল নদী পথেই তেল-কয়লা সহ সকল ধরনের কার্গো জাহাজ চলাচল বন্ধ করতে হবে। ৬ মাসের মধ্যে ঘষিয়াখালী চ্যানেল খনন শেষ করতে হবে। পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করার জন্য স্থানে স্থানে বাধ তুলে ফেলতে হবে। রামপাল ও ওরিয়নের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ সকল কথিত উন্নয়ন তৎপরতা বন্ধ করতে হবে। ভবিষ্যতে নদী বা সাগরে যে কোন ধরণের তেল দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব সীমিত করার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে হবে।