সুন্দরবনে আধুনিক জাহাজ ছাড়া তেল বহন করবে না বিপিসি
সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে আধুনিক জাহাজ ছাড়া তেল বহন করবে না বিপিসি। এখন থেকে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে এক প্রকোষ্ঠ জাহাজে জ্বালানি তেল বহন করা যাবে না। সুন্দরবনের মধ্যে তেল বহন করতে হলে অবশ্যই দ্বৈত প্রকোষ্ঠ বা স্তরের জাহাজ হতে হবে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এবিষয়ে গত বৃহস্পতিবার পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা কোম্পানিকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বিপিসির চেয়ারম্যান এ এম বদরুদোজ্জা বলেন, সুন্দরবনকে রক্ষার জন্য উন্নত জাহাজ চলাচলে বাধ্যবাধকতা আনা হয়েছে। দ্বৈত প্রকোষ্ঠ বা স্তর বিশিষ্ট আধুনিক জাহাজ ছাড়া সুন্দরবনের মধ্যে আর তেলবাহি জাহাজ চলবে না। আগে এক প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট জাহাজ চলতো। এখন দ্বৈত প্রকোষ্ঠ বাধ্যতামূলক হওয়াতে দুর্ঘটনা ঘটনার সম্ভাবনা কম।
এদিকে মঙ্গলবার সার বহনকারি জাহাজ ডুবির ঘটনায় পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
একের পর এক পণ্য বোঝাই জাহাজ ডুবির ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সুন্দরবন। যেসব জাহাজ ডুবছে তার বেশিরভাগই এক প্রকোষ্ঠের। এক প্রকোষ্ঠের জাহাজের তলা ফেটে যায়। কিন্তু দ্বৈত প্রকোষ্ঠ জাহাজ সহজে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। এজন্য তেল বহনে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য পণ্য বহনেও একই সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের শ্যালা নদীতে ফার্নেস অয়েল নিয়ে ‘সাউদার্ণ স্টার সেভেন’ নামের একটি জাহাজ ডুবে যায়। এতে ডলফিনসহ অনেক প্রাণী মারা যায়। মারা যায় অনেক গাছও। পরিবেশের ক্ষতি হয় ব্যাপকভাবে।
তেলবাহি ঐ জাহাজ ডুবির ঘটনায় সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে বেশ কিছু দিন সকল জাহাজ চলাচল বল্পব্দ ছিল। পরে আবার চলাচল উম্মুক্ত করে দেয়া হয়। ঐ ঘটনার প্রেক্ষিতে বিপিসি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার পহৃর্ব সুন্দরবনে সারবাহী একটি জাহাজ ডুবি হয়েছে। এর আগে তেলবাহী একটি জাহাজ ডুবে যায়। এই দুই জাহাজই ছিল এক প্রকোষ্ঠের বা এক স্তরের জাহাজ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্বি স্তরের জাহাজ হলে সহজে ফেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটবে না। ফাটলেও অনেক জোনে ধাক্কা খেতে হবে।
মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে শরণখোলা রেঞ্জের মরা ভোলা এলাকার ভোলা নদীর চরে আটকে মঙ্গলবার সারবাহি জাহাজ ডুবে যায়। জাহাজটি সার বোঝাই করে মংলা থেকে ঢাকায় যাচ্ছিল। এ ঘটনায় দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বনবিভাগ পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন চৌধুরীকে প্রধান করে চার সদস্যের ও বাগেরহাট জেলা প্রশাসক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শহীদুল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের আলাদা এ কমিটি গঠন করা হয়।
বনবিভাগের গঠিত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে ও জেলা প্রশাসকের গঠিত কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।