সুন্দরবন ধ্বংস আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ: এমাজউদ্দিন

স্নুন্দররবনকে ‘হত্যা’ করে বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা দেশের বাইরে থেকে করা হয়েছে। দেশে যখন জঙ্গি হামলা চলছে, তখন সুন্দরবনকে ধ্বংস করতে জাতিকে আড়াল করে এ চুক্তি করা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘সুন্দরবন একটাই: সুরক্ষার দায়িত্ব আমাদেরই’ শীর্ষক আলোচনায়  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ এ কথা বলেন।
সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সৈয়দ তোশারফ আলী, বাপার সাধারণ সম্পাদক ড. আবদুল মতিন, আইনজীবী হুমায়ুন কবির বুলবুল প্রমুখ।
তিনি বলেন, সুন্দরবনের যে এত ক্ষতি হচ্ছে, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরোপুরি জানেন না। সুন্দরবনের ক্ষতির বিষয়টি পুরোপুরি জানলে তিনি এত বড় ক্ষতি হতে দিতেন না।

এমাজউদ্দীন বলেন, সুন্দরবন বাংলাদেশের জন্য অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক ঝড়ঝঞ্ঝা থেকে বাংলাদেশের মানুষকে বাঁচিয়েছে। কত অল্প আয়ের জন্য জাতির কত বড় ক্ষতি করতে যাচ্ছে সরকার, তা এখনও বুঝতে পারছে না।

আগামী আগস্টের মধ্যে সুন্দরেবনের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করে জাতির সামনে তুলে ধরতে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান এমাজউদ্দীন। পাশাপাশি সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্র সরিয়ে অন্য জায়গায় স্থাপনেরও আহ্বান জানান তিনি।
সভায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- সিএইচআরএমের নির্বাহী প্রধান মোজাহেদুল ইসলাম মুজাহিদ।

প্রবন্ধে বলা হয়, সুপার ক্রিটিক্যাল পদ্ধতিতে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার ফলে শতকরা ১২ ভাগ দূষণ কম হবে সরকার এমন দাবি করলেও ৮৮ ভাগ দূষণের কথা বলছে না।

কয়েকটি গবেষণা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রবন্ধে বলা হয়, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে এলাকার শতভাগ পানি, ২০ ভাগ বাতাস এবং ৬৫ ভাগ মাটি দূষণের শিকার হবে।

সরকারের পক্ষ থেকে কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির দাবি করা হলেও বাস্তবে চার হাজার ৬০০ লোক এতে কাজ করতে পারবেন। বাস্তবতা হলো, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাবে সুন্দরবন সংলগ্ন পাঁচটি জেলার ১৯টি উপজেলার কয়েক লাখ লোক তাদের জীবিকা হারাবেন। এরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল।