সুন্দরবন সুরক্ষায় বাংলাদেশ ভারত এক সঙ্গে কাজ করবে
সুন্দরবনের সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ এবং ভারত একসাথে কাজ করবে। প্যারিসে গতকাল বুধবার বাংলাদেশের পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং ভারতের পরিবেশ মন্ত্রী প্রকাশ জাভাদেকারের বৈঠকে এ অঙ্গিকার ব্যক্ত করা হয়েছে। এতে সুন্দরবনের পাশাপাশি রয়েল বেঙ্গল টাইগার রক্ষার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
দুই মন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে বাংলা-দেশ এবং ভারতের সমস্যাগুলো অভিন্ন। এটি মোকাবিলায় দু’দেশকে একসাথে কাজ করতে হবে। নানা কারণে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সুন্দরবনের পরিবেশ বিপন্ন হবার পথে। এটিকে রক্ষা করতে হলে দু’দেশের সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার। ভারতের পরিবেশ মন্ত্রী জানান, সুন্দরবন রক্ষার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর সাথে আলোচনা করবেন।
বৈঠকের পর এক যুক্ত বিবৃতিতে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবন পৃথিবীর অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল। ঝড়সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে এ বনের আশ-পাশের ৭৫ লাখ জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে। পৃথিবীর অন্য যে কোনো অঞ্চল থেকে সুন্দরবনের উপকূলে প্রায় দ্বিগুণ হারে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বসবাসকারীদের দৈনিক গড় আয় আধা মার্কিন ডলার বা ৪০ টাকারও নিচে। আর ভারতীয় অংশে যারা বাস করেন তাদের আয় ৯০ সেন্ট বা ৭২ টাকার মতো। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আয় কমে যাওয়ায় এ অঞ্চলের জনগণ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাস্তবতার নিরিখে বাংলাদেশ ও ভারত সুন্দরবন রক্ষায় যৌথভাবে কাজ করা শুরু করেছে। বিশেষ করে সুন্দরবনের প্রতিবেশ, বাঘ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে দু’দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা কাজ করছে।
সুনামি এবং জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলের মানুষকে বাঁচাতে দু’দেশের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস প্রয়োজন উল্লেখ করে বৈঠকে বলা হয়, সুন্দরবনের উপকূলে বাস করা তিন কোটি মানুষকে বাঁচাতে তাদের অভিযোজন ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
বৈঠকে আরো বলা হয়, সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশ এবং ভারত যৌথভাবে কাজ করার জন্য কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এগুলো হচ্ছে-সুন্দরবন সুরক্ষা, বাঘের সুরক্ষা, মত্স্য সম্পদের সুরক্ষা এবং সুন্দরবন নিয়ে তথ্য আদান-প্রদান। সুন্দরবন রক্ষায় ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া সুন্দরবন রিজিওন কো-অপারেশন ইনিশিয়েটিভ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বলে বৈঠকে জানানো হয়।