‘স্থান সনদ’ পেল রূপপুর পরমানু বিদ্যুৎকেন্দ্র
‘স্থান সনদ’ বা সাইট লাইসেন্স পেল রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। পাবনার ঈশ্বরদীর নির্বাচিত স্থানে এই কেন্দ্র করতে আপত্তি নেই। বিদ্যুৎ কেন্দ্র করতে স্থানটি উপযুক্ত। মাটি, পানি, বাতাস, ভূমিকম্পসহ ৬৩ ধরণের পরীক্ষা করে এই সনদ দেয়া হল। এখন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ শুরু হবে।
মঙ্গলবার হোটেল সোনারগাঁও এ বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশনকে এই লাইসেন্স হস্তান্তর করে বাংলাদেশ পরমানু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।
কমিশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আলী জুলকারনাইনের হাতে লাইসেন্স তুলে দেন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. নঈম চৌধূরী। এ সময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মো. সিরাজুল হক খান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান, রোসাটমের ডেপুটি সিইও নিকোলাই স্পাসকি ও রাশিয়ান রেগুলেটরি সংস্থা রোস্টেকনজরের ডেপুটি চেয়ারম্যান আলেক্সেই ফেরাপনটভ উপস্থিত ছিলেন।
ইয়াফেস ওসমান বলেন, সকল পরীক্ষার পর রূপপুরকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য উপযুক্ত মনে করা হচ্ছে। এখন তাদের মূল কাজ শুরুর আগে একটি লাইসেন্স দিতে হয়। এই লাইসেন্স পাওয়া গেল।
মশিউর রহমান বলেন, পরমানু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি নতুন স্তরে গিয়ে দাঁড়াবে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের সফলতা পৌছে যাবে। এ কেন্দ্র স্থাপনে বিশ্বের সর্বাধুনিক ও উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। রাশিয়ান সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশ যে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে যাচ্ছে, তাতে দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হবে। বিজ্ঞান সচিব বলেন, পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে স্থান সনদ অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ। এই সনদের মাধ্যমে ঈশ্বরদীর রূপপুরে পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মূল কাজ শুরু এক ধাপ এগিয়ে গেল। মজিবর রহমান বলেন, এই ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। নিকোলাই স্পাসকি বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলক। পরমানু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য এখন খূবই গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময়ই কেন্দ্র স্থাপনের আনুসঙ্গিক কাজগুলো করতে হয়। যা কেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।
বিদ্যুকেন্দ্রটি নির্মাণ করবে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়াত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটম। তাদের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে সে অনুযায়ী ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার বা দেশীয় মুদ্র্ায় এক লাখ এক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২৩ সালের অক্টোবরে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। অন্যদিকে এর এক বছর পর দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৪ অক্টোবরে উৎপাদনে আসবে। কেন্দ্রটি ৫০ বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।