স্বর্ণখনির অসুস্থ শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে আদালতে

দক্ষিণ আফ্রিকার স্বর্ণখনিতে দীর্ঘদিন কাজ করার ফলে অসুস্থ হয়ে পড়া সাবেক ও বর্তমান কয়েকশো শ্রমিক এবার আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।

তাদের সহায়তা করছেন ৪০ জনের বেশি আইনজীবী । এই খনি শ্রমিকরা সিলোকোসিস নামে ফুসফুসের একধরনের দুরারোগ্য রোগে ভুগছেন।

তাদের অভিযোগ বছরের পর বছর ধরে খনিতে কাজ করার কারণে এটি ঘটেছে এবং খনি কর্তৃপক্ষ এক্ষেত্রে কোন ব্যবস্থাই নেয়নি।

তারা এই মামলাকে ক্ষতিপূরণ মামলা হিসেবে বিবেচনার দাবি করছেন। এতে তারা সফল হলে দক্ষিণ আফ্রিকায় ক্ষতিপূরণের ঘটনায় এটাই হবে সবচেয়ে বড় ধরনের মামলা।

খনি শ্রমিকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, যখন তারা অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন, তখন তাদের কাজ থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়।

ইস্টার্ন কেপের কালা গ্রামটির একজন বাসিন্দা যানদিসিলউই। ভারী ট্রেঞ্চ কোট পরা লম্বা, হাড্ডিসার মানুষটিকে দেখলে স্পষ্টই বোঝা যায়, সে অসুস্থ। তিনি ২৮ বছর ধরে একটি স্বর্ণখনিতে কাজ করেছেন।

তিনি জানান, “আমি এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিলাম যে আমাকে বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হল। এখন আমার যে অবস্থা তাতে আমার ভেড়াগুলোকে মাঠে চড়াতে গিয়েও হাঁফিয়ে উঠি। কারণ আমি লম্বা দূরত্বে এখন আর চলাফেরা করতে পারি না”।

কাছেই কয়েক ঘর পরে তার প্রতিবেশী নোসিফো ডালার বাস। স্বামীর মৃত্যুর বিষয়ে বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। তার সন্তানও খনিতে কাজ করে। এই মায়ের আশংকা তার সন্তানও বাবার মত প্রাণ হারায় কি-না।

জোহানেসবার্গ হাইকোর্টের বাইরে জড়ো হওয়া খনি শ্রমিকদের দাবি, খনি কর্তৃপক্ষকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোও খনি শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে সমর্থন জানিয়েছে।

তবে এক্ষেত্রে মামলার দীর্ঘসূত্রতার আশংকা রয়েছে। এ ধরনের ক্ষতিপূরণ মামলা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে বছর দশেকও সময় পেরিয়ে যায়।

অন্যদিকে খনি কোম্পানিগুলো আদালতের বাইরে বোঝাপড়া করার জন্য চাপ দিয়ে আসছে।