হরিপুরের তেল অধরাই থাকলো
সিলেটের হরিপুরে তেল তুলতে বাধা পড়ল। মাটির নিচে যে স্তরে তেল আছে সে পর্যন্ত নেয়া যায়নি খননযন্ত্র। অর্থাৎ শেষ পর্যন্ত কূপ খনন করা যায়নি।
তাই আপাতত তেল তোলার স্বপ্ন বাদ দেয়া হয়েছে। মাটির নিচে যেখানে তেল আছে তার উপরে আছে গ্যাস। সেই গ্যাস তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মাটির প্রায় সাত হাজার ফুট নিচে আছে তেল। কিন্তু সে পর্যন্ত পৌঁছাতে পারলো না বাপেক্স। যদিও এর আগে দশ হাজার ফুটের বেশিকূপ খনন করার অভিজ্ঞতা আছে বাপেক্সের।
প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে কূপ খননের পাইপ আটকে গিয়েছে।
কূপটি খনন করার কথা ছিল ৬ হাজার ৮৯০
ফুট। ৬ হাজার ৬৪৪ ফুট পর্যন্ত খনন করার পর খনন পাইপ আটকে যায়। যা আর কোনো ভাবেই ছাড়ানো যায়নি। বাকি ছিল মাত্র ২৪৬ ফুট। শেষের এই অল্প টুকু খনন করা গেলে পৌঁছানো যেত তেলের কাছে। জানা যেত তেলের এখনকার সত্তিকারের মজুদ সহ অন্যান্য তথ্য। কিন্তু তা আর হলো না। দীর্ঘদিনের অপেক্ষা আরও অপেক্ষায় ফেলে দিল। অপেক্ষার প্রহর বাড়িয়ে দিল।
কেন এমন হলো? তা এখনো নির্দিষ্ট হয়নি। সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, ভূতাত্ত্বিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। অথবা থাকতে পারে পরিচালনায় ত্রুটি।
ভূতাত্ত্বিক জটিলতার বিষয়ে কারো কিছু করার নেই। কিন্তু যদি পরিচালনায় ত্রুটি থাকে, কারো গাফিলতি থাকে, তবে তা খতিয়ে দেখা উচিত।
দেশের প্রথম এবং একমাত্র এই তেলক্ষেত্র পরিচালনার প্রথমেও গাফিলতি ছিল।
হরিপুর গ্যাস ক্ষেত্রের ৭ নম্বর কূপ থেকে ১৯৮৬ সালে তেল পাওয়া যায়।
প্রায় ৭ বছরে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার ৮৬৯ ব্যারেল তেল উত্তোলনের পর, ১৯৯৪ সালের ১৪ই জুলাই কূপটিতে তেলের চাপ প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে যায়। আর বন্ধ হয়ে যায় তেল তোলা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূগর্ভে তেলের সঙ্গে মোম জাতীয় একটি পদার্থ (ওয়াক্স) থাকে। তেল উত্তোলনের সময় ওই ওয়াক্স কূপের পাইপের গায়ে জমতে থাকে। কূপে তেলের প্রবাহ অব্যাহত রাখতে নিয়মিত ওয়াক্স পরিস্কার করতে হয়। হরিপুর ৭ নম্বর কূপে সে সময় তা করা হয়নি। সেই কারণে চাপ কমে গিয়ে তেলের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।
সেসময় যথাযথ ব্যবস্থা নিলে পুরো তেলের ব্যবহার করা যেত। কিন্তু তা হয়নি।
২৬ বছর পর হরিপুর থেকে নতুন করে তেল তোলার যে সম্ভাবনা দেখা গিয়েছিল তা আবার হোঁচট খেলো।