২০১৬ হবে দুর্নীতি দূর করার চ্যালেঞ্জ: প্রতিমন্ত্রী

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিদ্যুৎখাতে মাঠ পর্যায়ে দুর্নীতির অভিযোগ অনেক। তাই আগামী বছর মাঠ পর্যায় থেকে দুর্নীতি দূর করার উদ্যোগ নেয়া হবে। এটাই আমাদের জন্য এবার বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি জানান, টেকসই ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনকে বাংলাদেশ বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে। এই মুহুর্তে কয়লাভিত্তিক ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়াধীন। ভুটানে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার বিষয়টিও প্রায় চূড়ান্ত।
বুধবার বিদ্যুৎ ভবনে জাতীয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আহমেদ কায়কাউস, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেইন, পিডিবির চেয়ারম্যান কে এম হাসান এবং আরইবির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘আলোর পথে আরো এগিয়ে’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে  বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক মেলার উদ্বোধন করা হবে। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ আজ বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই মেলার উদ্বোধন করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির দূর করার পাশাপাশি সাশ্রয়ী ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়াও আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। গ্রাহকদের সাশ্রয়ী ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়ার লক্ষ্যে সরকার ২০২১ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা করেছে। তেল ভিত্তিক বেশি দামের বিদ্যুৎ থেকে সরে এসে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি জানান, বিদ্যুৎ বিনিময়ের ক্ষেত্রে ভুটানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। ভুটানে জলবিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছেন। অন্যদিকে ভারতীয় কোম্পানি আদানী ও রিলায়েন্স বাংলাদেশ বিনিয়োগের প্রস্তাব দিলেও তারা বার বার তাদের প্রস্তাব পরিবর্তন করায় সময় চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাদের প্রস্তাবগুলো যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার ইতিবাচক মনোভাব দেখাবে।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিল্পে বিদ্যুৎ দেয়া হবে না এটা ঠিক নয়। তবে বিচ্ছিন্নভাবে সংযোগ না দিয়ে পরিকল্পিত শিল্প এলাকায় বিদ্যুৎ দেয়ার ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে চাহিদার তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। ফলে বিদ্যুতের কোনো সমস্যা নাই। তাই সব ধরণের সংযোগই দেয়া হচ্ছে।
ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে তিনি বলেন, রেন্টালের মেয়াদ বাড়ানো হলেও তা খুব অল্প সময়ের জন্য বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া তাদের বিদ্যুতের দামও অনেক কমিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এতদিন সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছিল এখন উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে বিতরণ ও সঞ্চালনের বিষয়েও পরিকল্পিত উদ্যোগ নিয়েছে।
এবার মেলায় ৩০৩ টি স্টল আছে, কোম্পানির সংখ্যা ১৬০টি। মেলা উপলক্ষে চারটি সেমিনারও করা হবে। যার দুইটি বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে, বাকী দুইটি বিদ্যুৎ ভবনে করা হবে। প্রথমবারের মতো মেলায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও অংশ নিচ্ছে। তিনদিনব্যাপী আয়োজিত মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উম্মুক্ত থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনশেষে প্রতিমন্ত্রী বিদ্যুৎ বিভাগের নতুন ওয়েবসাইট উদ্বোধন করেন।