পেট্রোবাংলাকে বছরে ১৫ লাখ টন এলএনজি সরবরাহ করবে সামিট

বঙ্গপোসাগরে ভাসমান তরল প্রাকৃতিক গ্যাস রূপান্তর জাহাজ

জানুয়ারি ১৮, ২০২৪:

পেট্রোবাংলাকে বছরে ১৫ লাখ টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ করবে সামিট গ্রুপ। ২০২৬ সালের অক্টোবর থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত এ সরবরাহ অব্যাহত রাখার উদ্যোগ তাদের। এ বিষয়ে প্রাথমিক চুক্তি হয়েছে।

সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে একথা জানান।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে চুক্তিটি সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে ছাড়পত্র পাবে বলে প্রত্যাশা করছেন আজিজ খান।

সামিট ঠিক কোন দেশ থেকে এই এলএনজি সংগ্রহ করবে, তা জানাননি। পেট্রোবাংলায় সরবরাহের জন্য যেকোনো স্থান থেকে এলএনজি সংগ্রহের সুযোগ পাবে কোম্পানিটি।

এলএনজির দাম কত হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি আজিজ খান। বিষয়টি নিয়ে ই-মেইলে পেট্রোবাংলার বক্তব্য জানতে চেয়েছিল রয়টার্স। তাদের তরফ থেকেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া মেলেনি।

চুক্তিটি বাংলাদেশের চতুর্থ দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তি এবং সামিটের প্রথম চুক্তি।

সামিট গ্রুপ বর্তমানে এক ডজনেরও বেশি জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট এবং একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল পরিচালনা করছে। এলএনজি আমদানির জন্য রয়েছে একটি রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটও (এফএসআরইউ)। পরিচ্ছন্ন জ্বালানি খাতে ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে কোম্পানিটির।

আজিজ খান রয়টার্সকে জানান, ২০২৫ সাল নাগাদ ১ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে কক্সবাজারের মাতারবাড়ী উপকূলবর্তী এলএনজি টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরুর ব্যাপারে আশাবাদী তিনি।

মাতারবাড়ী এলএনজি টার্মিনালের কাজ এখনো কাউকে দেয়া হয়নি। তবে সামিটের প্রত্যাশা, কাজটি তারাই পাবে এবং ২০২৯ সাল নাগাদ মাতারবাড়ীতে প্রথম ধাপের কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।

জাপানি অংশীদার সুমিটোমো কর্প জেইআরএর সঙ্গে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে আগ্রহী সামিট গ্রুপ। এর বার্ষিক সক্ষমতা হবে প্রায় ৭০ কোটি টন, যা প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ টন পর্যন্ত বাড়ানো যাবে।

সাক্ষাৎকারে আজিজ খান বলেছেন, ‘অনশোর টার্মিনালের নির্মাণকাজ আগামী বছরের যেকোনো সময় শুরু হতে পারে। জমি অধিগ্রহণের কাজ এখনো চলছে। সরকার মনে করছে, নির্মাণকাজ ২০২৭ সালের মধ্যে শেষ হবে। ব্যক্তিগতভাবে মনে করছি ২০২৯ সালের মধ্যে এটি হয়ে যাবে।’

আগামী মাসগুলোয় স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনার পরিমাণ বাড়বে বলে মনে করছেন আজিজ খান। এর মূল কারণ বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং বিশ্ববাজারে এলএনজির নিম্নমুখী দাম।

দেশে বর্তমানে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে ২৮০ কোটি ঘনফুটের কিছু বেশি। এর মধ্যে এলএনজি সরবরাহ হচ্ছে ৭৫ কোটি ঘনফুটের কম-বেশি। সার্বিক গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় এলএনজির অবদান প্রায় ২৭ শতাংশ। আবার এ এলএনজির সিংহভাগ আনা হচ্ছে কাতার ও ওমান থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায়।

এশিয়ার স্পট মার্কেটে টানা অষ্টম সপ্তাহের মতো এলএনজির দাম কমেছে। এর মধ্য দিয়ে সাত মাসের সর্বনিম্নে নেমেছে জ্বালানিটির দাম। ইউরোপ ও উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় মজুদ পরিস্থিতি ভালো থাকায় বাজারদর নিম্নমুখী।