জ্বালানিতে বাড়ছে আমদানি নির্ভরতা
জ্বালানিতে আমদানির ওপর নির্ভরতা বাড়ছে। দিন দিন বাড়ছে জ্বালানি খরচ । গ্যাস ফুরিয়ে যাচ্ছে। কয়লা তোলার উদ্যোগ নেই।
এমনই পরিস্থিতিতে পালিত হতে যাচ্ছে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস। প্রতিবছরের মতো এবারও দিবসটি পালনে উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের এই দিনে অর্থাৎ ৯ আগস্ট নেদারল্যান্ডসের শেল অয়েল কোম্পানির কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র কিনে নেন। তিতাস, হবিগঞ্জ, রশিদপুর, বাখরাবাদ ও কৈলাসটিলা এই পাঁচ গ্যাসক্ষত্রে বঙ্গবন্ধু ৪০ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড দিয়ে কিনে নিয়েছিলেন। এগুলো থেকে বর্তমানে মোট সরবরাহের প্রায় ৪০ শতাংশ দেয়া হচ্ছে্।
জ্বালানি নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণে রাখতে ২০১০ সাল থেকে এই দিনটিকে জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্রও প্রকাশ করা হয়েছে। দিবস উপলক্ষে জ্বালানি বিভাগ পেট্রোসেন্টারে সেমিনারের আয়োজন করেছে।
জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আমদানির ওপর নির্ভরতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি গ্যাস খাতের মহাপরিকল্পনায় আমদানিকেই প্রধান্য দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এলএনজি আমদানি করেই সংকট সামাল দেয়া হবে। গ্যাস আমদানি করা হবে মিয়ানমার থেকে। যোগ দেয়া হবে টাপি পাইপ লাইনে।
এখনই দেশে অন্তত ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি আছে। ৩৭০ কোটি ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে প্রতিদিন ২৭০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হচ্ছে।
আগামী ২০২১ সালের পর থেকে দেশীয় কোম্পানির গ্যাসের উৎপাদন কমতে থাকবে। সমুদ্রে গ্যাস উত্তোলন সফল না হলে পুরোপুরি আমদানি করেই গ্যাসের চাহিদা মেটানো হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে শতকরা ৮০ ভাগ গ্যাসই বিদ্যুৎ ও শিল্প-কারখানায় ব্যবহার করা হয়। আবাসিক ও অন্য খাতে মাত্র ২০ ভাগ। কিছু তরল গ্যাস এখনই আমদানি করা হয়, যা রান্নার কাজে ব্যবহার হচ্ছে। প্রাজনীয় তেলের শতকরা ৯৫ ভাগই আমদানি করা হয়। আমদানি করা তেলের সিংহভাগ ব্যবহার হয় পরিবহন ও কৃষিতে।
সংকট থাকা সত্ত্বে ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে যথাযথ পদক্ষেপ নেই। আবার আমদানি নির্ভর পরিকল্পনা বাস্তবায়নও হচ্ছে ধীরগতিতে। সবমিলিয়ে ভাল নেই জ্বালানিখাত।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, বিদ্যুতের তুলনায় জ্বালানিখাত নিয়ে অগ্রগতি সন্তোষ নয়। বিদ্যুতের মতো জ্বালানিখাতেরও মহাপরিকল্পনা করা দরকার। তিনি বলেন, শুধু পরিকল্পনা নয় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কারিগরি নির্দেশনা দেয়া, গবেষণা করা ও তদারকি করা জরুরি। এসবের ঘাটতি হলে পরিকল্পনা পরিকল্পনাই থেকে যায়।