দেশে প্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনে একজন আর্সেনিক দূষণের শিকার

দেশে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতি ১৪ জনে একজন আর্সেনিক দূষণের শিকার। বছরে কমপক্ষে ৪৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে আর্সেনিকের বিষক্রিয়াজনিত কারণে। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি) আয়োজিত সেমিনারে গবেষকেরা এ তথ্য দেন।

মূল উপস্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের অধ্যাপক যোসেফ গ্রাজিয়ানো বলেন, আর্সেনিক স্বাস্থ্যের ওপর ১৮ ধরনের বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এর কারণে ফুসফুস, ত্বক ও মূত্রথলির ক্যানসার হয়। আর্সেনিকের কারণে হূদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। তিনি বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে আর্সেনিক দূষণের শিকার গর্ভবতী মায়ের গর্ভে থাকা শিশুর রক্তেও কিছু পরিমাণ আর্সেনিক থাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূত্বত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক কাজী মতিন আহমেদ বলেন, নলকূপের পানি পরীক্ষা করে দেখা গেছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আর্সেনিকের সমস্যা বেশি। তুলনামূলকভাবে পার্বত্য অঞ্চল নিরাপদ। তিনি বলেন, নিরাপদ পানির বেশকিছু বিকল্প নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। দেখা গেছে, গভীর নলকূপের পানিতে আর্সেনিকের সমস্যা কম।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান মীর মিসবাহ উদ্দিন বলেন, আর্সেনিকোসিস (আর্সেনিকের বিষক্রিয়াজনিত শারীরিক সমস্যা) শতাব্দী-পুরাতন চিহ্নিত সমস্যা কিন্তু এর নিরাময়ে কোনো ওষুধ এখনো উদ্ভাবন হয়নি। সমস্যা মোকাবিলায় মানুষ ইউরিয়া, সিলেনিয়াম, ভিটামিন, রসুন, কালিজিরাসহ নানা কিছু ব্যবহার করেছে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ভূগর্ভস্থ পানি অতিমাত্রায় ব্যবহারের কারণে আর্সেনিকের সমস্যা প্রবল হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে পারলে আর্সেনিক সমস্যা মোকাবিলা করা অনেকাংশে সহজ হবে। তিনি বলেন, এ জন্য সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ও বিএমআরসির সভাপতি অধ্যাপক মাহমুদ হাসান বলেন, ফরমালিন বা ধূমপানের চেয়ে আর্সেনিকের সমস্যা অনেক বড়।

অনুষ্ঠানে সাংসদ হাবিবে মিল্লাত বলেন, দেশে মেডিকেল গবেষণায় বরাদ্দ খুব কম। বিএমআরসির জন্য বছরে বরাদ্দ এক কোটি টাকার মতো। এর মধ্যে ৮০ লাখ টাকা যায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতায়।