চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সঞ্চালনে দু’দফা বিপর্যয় ভোগান্তিতে গ্রাহক
হাটহাজারীর সঞ্চালন লাইনে দুইদফা বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে দুপুরের পর থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলায়। গ্রিড বিপর্যয়ের কারণে বন্ধ হয়ে যায় চট্টগ্রামের ১৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রও। এতে ৮১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে চট্টগ্রাম শহরসহ ১৫টি উপজেলা অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। চরম ভোগান্তির শিকার হন গ্রাহকরা।
তবে সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে মধ্যরাত হবে বলে জানিয়েছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পিজিসিবি সূত্র জানায়, আজ বুধবার প্রথম দফায় দুপুর পৌনে ১টার দিকে হাটহাজারি-কাপ্তাই ও হাটহাজারি-ফেনীর সঞ্চালন লাইন দুইটি ট্রিপ করে। এতে পুরো চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৪০ মিনিট বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। মেরামতের পর বিকেল ৪টার দিকে পুরো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এরপর আবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হাটহাজারি ২৩০/১৩২ কেভি গ্রিড সাবস্টেশনের একটি ১৩২ কেভি সার্কিট ব্রেকার পুড়ে যায়। এবার পুরো চট্টগ্রাম অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। এ সময় একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত ১৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রই বন্ধ হয়ে যায়।
পিজিসিবির সহকারি ম্যানেজার (জনসংযোগ) এবিএম বদরুদ্দোজা জানান, সন্ধ্যায় সার্কিট ব্রেকার পুড়ে যাওয়ার পর পরই কাজ শুরু করে পিজিসিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। সন্ধ্যা সাতটার দিকে অন্য একটি সার্কিট ব্রেকার প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে সঞ্চালন লাইনটি মেরামত করা হয়। সঞ্চালন লাইনটি বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য তৈরি হলেও বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু হাওয়ার আগে পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে না। এরইমধ্যে ঢাকা চট্টগ্রাম লাইন দিয়ে চট্টগ্রামের দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। এতে চট্টগ্রামের কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রামের পিডিবি চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান জানান, দুপুরের দিকে সঞ্চালন লাইন যে সমস্যা হয় তাতে ৪০ মিনিট বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। খুব দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। কিন্তু সন্ধ্যায় সার্কিট ব্রেকার পুড়ে যাওয়ার ঘটনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি শুরু করতে কিছুটা সময় লাগছে। রাতের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এদিকে চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, বিদ্যুৎ না থাকায় প্রায় পুরো শহর অন্ধকারে রয়েছে। যেসব ভবনে জেনারেটর সুবিধা রয়েছে কেবল সেসব ভবনে লাইট-ফ্যান চলছে। ভ্যাপসা গরমে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। রাত ৮টার পর কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা হয়। কিন্তু বিকল্প লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হলেও উৎপাদন কম থাকায় ঘন ঘন লোডশেডিং করছে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি।
এই প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত চার জেলার অধিকাংশ এলাকা তখনো বিদ্যুৎহীন ছিল। নগরীর কিছু কিছু এলাকায় সরবরাহ শুরু হলেও ঘন্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং হচ্ছিল।