সেচ মৌসুমে সাড়ে ১৫ লাখ টন ডিজেল ব্যবহার হবে

আসন্ন বোরো মৌসুমে সেচযন্ত্র চালাতে ১৫ লাখ ৫৬ হাজার মেট্রিক টন ডিজেলের প্রয়োজন হবে। নভেম্বর থেকে আগামী বছরের মে মাস পর্যন্ত সেচ কাজের জন্য এই তেলের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এই জ্বালানি তেল সরবরবাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সেচের সুযোগ নিয়ে কেউ যাতে অতিরিক্ত তেল মজুদ করতে না পারে সেজন্য বিপিসির তদারকি দল কাজ করবে।

বুধবার জ্বালানি বিভাগে সেচ মৌসুমে জ্বালানি তেলের চাহিদা বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ নির্দেশ দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যদের মধ্যে জ্বালানি সচিব নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান খালিদ মাহমুদসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে যেসব গভীর নলকূপ আছে, তার ৮০ ভাগ চালানো হয় ডিজেল দিয়ে আর বাকি ১০ ভাগ বিদ্যুৎ দিয়ে চলে। সেচের সময় ডিজেলচালিত গভীর নলকূপ, অগভীর নলকূপ, এলএলপি (লো লিফট পাম্প), পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর ব্যবহার করা হয়। সেচ মৌসুমে এ ধরনের ১৬ লাখ ৪৭ হাজার যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে দুই হাজার ৩২১টি গভীর নলকূপ আর অগভীর নলকূপ হচ্ছে ১১ লাখ ১২ হাজার ৯১টি।

বৈঠকে তৌফিক-ই-ইলাহী বলেন, সেচ মৌসুমে তেল সরবরাহের জন্য পর্যাপ্ত মজুদ রাখতে হবে। ডিজেলের যাতে কোনও সংকট না হয়। নির্দিষ্ট সময়ে নিরবচ্ছিন্ন তেল পরিবহন করা জরুরি।

বৈঠকে সেচ মৌসুমে দেশের সব স্থানে সঠিক সময়ে ও নির্ধারিত মূল্যে ডিজেল সরবরাহ অব্যাহত রাখতে বিপিসি, পিডিবি, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা ও পরামর্শ দেওয়া হয়। এজন্য প্রতি মাসে চট্টগ্রামে তেল বিপণন কোম্পানিগুলোর প্রধান স্থাপনাগারে এবং ইস্টার্ন রিফাইনারিতে ডিজেল মজুদ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি সেচ মৌসুম শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ দুই মজুদাগারে সার্বক্ষণিকভাবে তেল সংরক্ষণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে, উত্তরাঞ্চলের প্রধান তেল স্থাপনা বাঘাবাড়ী ডিপোর তিনটি তেল বিপণন কোম্পানির স্টোরেজ ট্যাংকে ডিজেলের পর্যাপ্ত মজুদ রাখতে হবে।

জ্বালানি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সেচ মৌসুমে উত্তরাঞ্চলে ডিজেলের চাহিদা ২ থেকে ৩ গুণ বৃদ্ধি পায়। গ্রীষ্ম ও বর্ষায় দেশের ডিপোগুলো থেকে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ হাজার টন ডিজেল বিক্রি হয়। সেচ মৌসুমে দৈনিক বিক্রির পরিমাণ ১৪ হাজার টনও ছাড়িয়ে যায়। সঠিক সময়ে ও নির্ধারিত মূল্যে কৃষকের কাছে জ্বালানি তেল পৌঁছানোর জন্য চলতি মাসের শেষে বিপিসির চট্টগ্রামের প্রধান কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয় বৈঠকে। এছাড়া, দেশের বিভিন্ন স্থানে দ্রুত জ্বালানি পৌঁছে দিতে নৌপথে ডিজেল পরিবহন ও খালাসে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

বোরো মৌসুমে উত্তরাঞ্চলে তেল সরবরাহ করা হয় নৌ ও রেলপথে। এজন্য রেলের বাড়তি ওয়াগন প্রস্তুত রাখাও নির্দেশ দেওয়া হয়।