এগিয়ে চলেছে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রর কাজ: উৎপাদন ২০১৯ সালে
পটুয়াখালির পায়রার ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ধাপের কাজ শেষ। দ্বিতীয় ধাপের কাজ চলছে। বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) এই বিদ্যুৎকেন্দ্র করছে। ২০১৯ সালে এখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা।
শুক্রবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এসময় বিদ্যুৎকেন্দ্রর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সহ অন্য কর্মকর্তারা। ঢাকা থেকে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিকরাও এই পরিদর্শনে অংশ নেন।
এসময় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, পায়রায় নয় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র করা হবে। এতে এক হাজার ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হবে।
পটুয়াখালীর কলপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে প্রায় এক হাজার একর জমির উপর এই কেন্দ্র করা হচ্ছে। বাংলাদেশ চীনসহ কয়েক দেশের প্রায় তিন হাজার শ্রমিক দিনরাত এখানে কাজ করছেন। এরমধ্যে প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশি, ৬০০ চীনা ও কয়েকশ ভারতীয় ও মালয়েশিয়ান শ্রমিক আছেন।
বিভিন দেশ থেকে নৌ-পথে নির্মাণ সামগ্রী আসছে বিদ্যুকেন্দ্রের অস্থায়ী জেটিতে। অত্যাধুনিক ক্রেনের মাধ্যমে জাহাজ থেকে তুলে ট্রাকযোগে তা পাঠানো হচ্ছে প্রকল্প এলকায়। স্থায়ী জেটি নির্মাণের লক্ষ্যে রামনাবাদ চ্যানেলে শুরু হয়েছে কাজ। এই জেটি থেকে কয়লা খালাস হয়ে চলে যাবে বয়লারগুলোতে।
ইতোমধ্যে ঐ এলাকায় দৃশ্যমান হয়েছে বয়লার-১ এর কিছু অংশ। প্রতিটি কাজেই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যুৎকেন্দ্রের বাইরে আরও ১৬ একর জমিতে চলছে ১৩৫ পরিবার পুনর্বাসনে আবাসন কাজ। এখানে তৈরি করা হবে স্কুল, বাজার, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
বাংলাদেশের নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি)
যৌথভাবে সমান অংশীদারীতে বিসিপিসিএল গঠন করে।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে প্রায় ১২ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। এরমধ্যে ৮০ শতাংশ ঋণ দেবে চীনের এক্সিম ব্যাংক ও চায়না ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া, চীন ও অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা আমদানি করা হবে।
গত বছর মার্চে বিসিপিসিএল এবং চীনের নর্থ-ইস্ট ইলেকট্রিক পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এনইপিসি) ও চায়না ন্যাশনাল এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানির (সিইসিসি) মধ্যে প্রকৌশল, ক্রয় ও নির্মাণ (ইপিসি) চুক্তি হয়।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। অদূর ভবিষ্যতে আমাদের চাহিদা ৬০ হাজার মেগাওয়াট। চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমরা শুধু ঠিকাদার হিসেবেই নয় আরও বেশি বিনিয়োগকারী হিসেবেও পেতে চাই। বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ এখন উন্মুক্ত ও ভালো জায়গা।