বিদ্যুৎ খরচ কমানোর কয়েক উপায়
সর্তকভাবে ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ খরচ কমানো সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ঠ প্রকৌশলীরা।এক ইউনিট ব্যবহার কম বেশির কারণে অনেক সময় দ্বিগুণ হয়ে যায় খরচ। তাই একটু পরিকল্পিত ও সচেতনভাবে ঘরে বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেই সাশ্রয়।কারণ যত কম বিদ্যুৎ ব্যবহার ততই খরচ কম। নিদিষ্ট ইউনিটের বেশি গেলেই বিল বেড়ে যায়।
বিদ্যুৎ প্রকৌশলীদের পরামর্শ অনুযায়ি বিদ্যুৎ খরচ কমানোর কয়েকটা উপায়:
বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত ধাপের মধ্যে রাখা:
এখন বিদ্যুতের বিল হয় ব্যবহারের ধাপ অনুযায়ি।এক এক ধাপে আলাদা আলাদা বিল হয়। যদি বিদ্যুতের ব্যবহার ৭৫ ইউনিটের মধ্যে সীমিত থাকে, তাহলে বিল আসবে প্রতি ইউনিট চার টাকা। কিন্তু ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিল আসবে চার টাকা ৪৫ পয়সা। তৃতীয় ধাপ ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিল আসবে পাঁচ টাকা ৭০ পয়সা।ফলে ২০০ ইউনিটের এক ইউনিট বেশি হলেই প্রতি ইউনিটে খরচ বেড়ে যাবে এক টাকা ২৫ পয়সা।অর্থাৎ ২০০ ইউনিট খরচ হলে বিল দিতে হবে ৮৯০ টাকা। আর ২০১ ইউনিট খরচ হলেই দিতে হবে এক হাজার ১৪৬ টাকা। এক ইউনিট বেশি ব্যবহারের জন্য বেড়ে গেল ২৫৬ টাকা। এভাবে প্রত্যেক ধাপেই অল্পের জন্য খরচ কম বেশি হয়।
৩০১ ইউনিট থেকে ৪০০ ইউনিট পর্যন্ত খরচ আসবে প্রতি ইউনিট ছয় টাকা দুই পয়সা। ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিট পর্যন্ত খরচ হবে নয় টাকা ৩০ পয়সা। এর বেশি হলে ইউনিট প্রতি বিল হবে ১০ টাকা ৭০ পয়সা।
প্রাকৃতিক আলো বাতাসের ব্যবহার:
দিনের বেলায় ঘরের ভেতর বাতি না জ্বালিয়ে সূর্যের আলোর সুবিধা নেয়া যেতে পারে।জ্বালাণা খোলা রেখেও করা যেতে পারে ঘর ঠাণ্ডা।এতে বিদ্যুতের ব্যবহার একটু কমবে।
সুইচ বন্ধ রাখা:ফ্যান, বাতি, টিভি, কম্পিউটার ব্যবহার না করলে সব সময় এগুলোর সুইচ বন্ধ করে রাখা।অনেক সময় যে ঘরে কোন কাজ নেই সে ঘরেও বাতি জ্বলতে থাকে। তাই এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যাওয়ার সময় বাদি বন্ধ করতে হবে।
মেশিন বা ইস্ত্রি ব্যবহার না করলে প্লাগ খুলে রাখা উচিত। কম্পিউটার বা টিভি ব্যবহার না করলে স্লিপ মুডে বা বন্ধ করে রাখুন।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার:
প্রচলিত বাতির তুলনায় এনার্জি বাল্ব বা এলইডি বাতি ব্যবহার করা হলে বিদ্যুতের ব্যবহার কমে যাবে। প্রচলিত বাতি একশ’ ওয়াট হলে সাশ্রয়ী বাতিতে ২৫ ওয়াটে হয়ে যায়। এখন ইনভার্টারযুক্ত ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিন পাওয়া যায়। এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ বিল দুই তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনা সম্ভব।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রন যন্ত্র ব্যবহার:
নিয়ন্ত্রিতভাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রন ব্যবহার করা গেলে খরচ কমে যাবে। তাপমাত্রা সবসময় ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে হবে। নির্দিষ্ট মাত্রায় ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়ার পর শীতাতপ নিয়ন্ত্রন যন্ত্র বন্ধ করে ফ্যান চালানো যেতে পারে।রাতে টাইমার দিয়ে রাখা ভালো, যাতে নির্দিষ্ট মাত্রায় ঠাণ্ডা হওয়ার পর আপনা আপনি বন্ধ হয়ে যায়। এসি ও ফ্রিজের ফিল্টার নিয়মিত সময় পরপর পরিষ্কার করানো হলে সেটি কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে।
মানসম্মত তার ব্যবহার:
বিদ্যুতের সংযোগ ও তারের ওপর বিদ্যুতের ব্যবহার নির্ভর করে। খারাপ মানের তার হলে, সংযোগ দুর্বল বা নড়বড়ে হলে লো ভোল্টেজের সৃষ্টি করে, ফলে বিলও বেড়ে যায়। বহুতল ভবনের সাব-স্টেশন পুরাতন হলে বেশি বিলের কারণ হতে পারে। বছরে অন্তত একবার এসব যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করতে হবে।
বিকল্প যন্ত্রপাতির ব্যবহার:
মাইক্রো ওভেনে ডিফ্রস্ট না করে পানিতে রেখে খাবারের বরফ ছাড়িয়ে নেয়া যেতে পারে।ওয়াশিং মেশিনে গরম পানির সেটিং ব্যবহার না করলে বিদ্যুৎ বিল কমে আসবে।