বাংলাদেশের ব্লকের ১০ শতাংশ ভারতের মধ্যে পড়েছে
সাগরের তেল গ্যাস অনুসন্ধানের খুব সামান্য অংশই ভারতের অংশে চলে গেছে। ব্লক ভেদে এর পরিমান এক থেকে ১০ শতাংশের মত। বাংলাদেশ ভারত সমুদ্রসীমা নির্ধারনের পর রায় পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে এই হিসাব পাওয়া গেছে।
সমুদ্রে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ২০১২ সালে ব্লকভাগ করে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করা হয়। ভারতের দাবি অনুযায়ি সেই ব্লকের ১০টিতেই ছিল তাদের নিজেদের অংশ। রায়ের পর দেখা গেছে এখন মাত্র পাঁচটিতে তাদের অংশ আছে। তাও সীমানা ঘেষে সামান্য অংশ। বাংলাদেশের দক্ষিনের জেলা সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে একেবারে সোজা প্রায় সরল রেখায় এই সীমানা ঠিক হয়েছে।
রায় পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সাগরের একেবারে গভীরে অর্থনৈতিক এলাকায় ২৪ নম্বর ব্লকের সবচেয়ে বেশি জায়গা চলে গেছে। এই ব্লকের আয়তন ছিল তিন হাজার ৪১১ বর্গকিলোমিটার। এরমধ্যে ভারতের অংশে চলে গেছে প্রায় ৬৫০ বর্গকিলোমিটার। ১৯ নম্বর ব্লকের আয়তন তিন হাজার ৪০২ বর্গকিলোমিটার। এরমধ্যে ভারতের অংশে চলে গেছে প্রায় ৫০০ বর্গকিলোমটার। ১৪ নম্বর ব্লকের আয়তন তিন হাজার ৩৯২ বর্গকিলোমিটার। এরমধ্যে ভারতের অংশে চলে গেছে প্রায় ৪৫০ বর্গকিলোটিমার। নয় নম্বর ব্লকের আয়তন তিন হাজার ৩৮২ বর্গকিলোমিটার। এরমধ্যে ভারতে অংশে চলে গেছে প্রায় ৪০০ বর্গকিলোমিটার। পাঁচ নম্বর ব্লকের আয়তন ছয় হাজার ২৩১ বর্গকিলোমিটার। এরমধ্যে ভারতের অংশে চলে গেছে প্রায় ৩০০ বর্গকিলোমিটার। এছাড়া এক নম্বর ব্লকের আয়তন পাঁচ হাজার ৭১৯ বর্গকিলোমিটার যার প্রায় ১৫০ বর্গকিলোমিটার চলে গেছে ভারতের অংশে।
ভারতের দাবি অনুযায়ি পেট্রোবাংলার করা ব্লকের ৫, ৬, ৯, ১০, ১৪, ১৫, ১৯, ২০, ২৪, ২৫ নম্বর ব্লকে নিজেদের অংশ আছে বলে দাবি করেছিল ভারত। এরমধ্যে ৫, ৬, ৯, ১০, ১৪, ১৯ ২৪ নম্বর ব্লকের প্রায় পুরোটাই তারা দাবি করেছিল।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর বলেন, এখন সাগরের পুরো এলাকার আমাদের হয়েগেল। সেখানে ইচ্ছেমত খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান করা যাবে। আমাদের দেশের সীমান্তবর্তী দুই দেশই তাদের এলাকায় সম্পদ পেয়েছে। আমাদেরও পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করে খনিজ অনুসন্ধানের কাজ শুরু করব। তিনি বলেন, আমরা যে পর্যন্ত নিজেদের বলে দাবি করেছিলাম তার প্রায় পুরোটাই পেয়েছি। খুবই সামান্য অংশ ভারতের অংশে চলে গেছে।
সাগরের শুধু ১০ ও ১১ নম্বর ব্লকের জন্য আমেরিকার কোম্পানি কনোকো ফিলিপসের সাথে উৎপাদন বন্টন চুক্তি (পিএসসি) হয়েছে। ১১ নম্বর ব্লকের পুরো এলাকাতেই জরিপ কাজ করা হলেও ভারতের দাবি থাকায় ১০ নম্বর ব্লকের পুরো এলাকায় জরিপ করা হয়নি। তিন হাজার ৮৬৪ বর্গকিলোমিটারের ব্লকটিতে এক হাজার ১৬৪ বর্গকিলোমিটার ভারত নিজেদের বলে দাবি করেছিল। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ২৮০ কিলোমিটার দূরে এদুটি ব্লকে সমুদ্রের গভীরতা এক থেকে দেড় কিলোমিটার। ২০১১ সালের ১৬ জুন সাগরের ১০ ও ১১ নম্বর ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য কনোকো ফিলিপসের সঙ্গে পিএসসি করে পেট্রোবাংলা। বঙ্গোপসাগরের দুটি ব্লকের পাঁচ হাজার ১৫৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান করা হয়।
এছাড়া গভীর সমুদ্রে ৯, ১২, ১৪, ১৫, ১৬, ১৯, ২০, ২১, ২৪ ও ২৫ নম্বর ব্লকের সম্পূর্ণ অংশ অনুসন্ধানের জন্য উম্মুক্ত হলো। অগভীর সাগরে ১, ২, ৩, ৫, ৬ ও ৮ নম্বর ব্লকে কোন অনুসন্ধান করা হয়নি।