লোহার খনি আবিস্কার হলো দিনাজপুরে
দিনাজপুরে দেশের একমাত্র লোহার খনি আবিস্কার হয়েছে। নানা জরিপের পর এবিষয় নিশ্চিত করেছে ভূ-ত্বাত্তিক জরিপ অধিদপ্তর।
জয়পুরহাট বিসিএসআইআর পরীক্ষাগারে পরীক্ষায় এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ঠ সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে খনির ভূগর্ভের এক হাজার ৭৫০ ফুট নীচে ৪০০ ফুট পুরুত্বের লোহার স্তর পাওয়া গেছে। মুল্যবান ম্যাগনেটিক মিনারেল, হেমাটাইট, ম্যাগনেটাইট ও লিমোনাইট সন্ধান পাওয়া গেছে। এছাড়াও এক হাজার ২০০ ফুট গভীরে চুনা পাথর পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
দিনাজপুর শহর থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরে সীমান্ত ঘেষা উপজেলা হাকিমপুর হিলি। উপজেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার পূর্বে ইসবপুর গ্রাম। ২০১৩ সালে এই গ্রামের ৩ কিলোমিটার পূর্বে মুশিদপুর এলাকায় কুপ খনন করে খনিজ পদার্থের সন্ধান পায় ভূ-তাত্বিক জরিপ অধিদপ্তর। দীর্ঘ ৬ বছর পর চলতি বছরের ১৯ শে এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করে ৩০ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল। সেখানে এক হাজার ১৫০ ফুট গভীরে চুনাপাথরের সন্ধানও মেলে। এক হাজার ৭৫০ ফুট গভীরে লোহার খনি আবিষ্কারের কথাও নিশ্চিত করেছে তারা।
ইতোমধ্যে জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খনি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বাংলাদেশ ভূ-ত্বাত্তিক জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জিল্লুর রহমান চৌধূরী বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম লোহার খনি আবিস্কার হলো। বাংলাদেশের খনিজ সম্পদের এটা নতুন অধ্যয়। অনেক বছর আগে এই অঞ্চলে ৬০ কোটি বছর আগে সমুদ্র ছিল। তাই জমাট বাঁধা আদি শিলার ভেতরে লোহার আকরিকের সন্ধান পাওয়া গেছে।
জিএসবি কর্মকর্তারা জানান. বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে লোহার খনি আবিষ্কার করা হয়েছে, সেসব খনির লোহার মান ৫০ শতাংশের নিচে। আর বাংলাদেশের লোহার ৬৫ শতাংশের উপরে। ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর ২০১৩ সালে এ গ্রামের ৩ কিলোমিটার পূর্বে মুশিদপুর এলাকায় কূপ খনন করে খনিজ পদার্থের সন্ধান পেয়েছিল। সেই গবেষণার সূত্রধরে দীর্ঘ ৬ বছর পর চলতি বছরের ১৯ শে এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। এরপর ১৩৮০-১৫০০ ফুট গভীরতায় খননের সময় লোহার অস্থিত্ব পাওয়া যায়। এ খবর পেয়ে ২৬ মে জিএসবি’র মহাপরিচালক জিল্লুর রহমান চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখানে পরিদর্শনে আসেন। এসময় মহাপরিচালক সাংবাদিকদের সুখবর না দিলেও লোহার খনি আবিষ্কার হতে চলেছে এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। অবশেষে দীর্ঘ চেষ্টার ফলে ১৭৫০ ফুট গভীরতা খনন করে লোহার খনির আবিষ্কার করা হয়েছে। সেখানে প্রায় ৪০০ ফুট পুরুত্বের লোহার আকরিকের এ স্তরটি পাওয়া গেছে।
গত ১৯ এপ্রিল থেকে ইসবপুর গ্রামে কূপ খনন শুরু করা হয়। ৩০ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল এ কার্যক্রম পরিচালনা করে।